যাত্রীদের সুবিধার্থে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসহ সারাদেশের বেশ কয়েকটি স্টেশনে গত বছরের ২০ এপ্রিল টিকিট ভেন্ডিং মেশিন (টিভিএম) স্থাপন করা হয়। এই মেশিনে অনলাইনে সরাসরি টিকিট কিনতে পারেন যাত্রীরা। এতে স্টেশনে এসে টিকিট সংগ্রহ করতে কাউন্টারের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় না। তবে এই পদ্ধতিতে টিকিট কাটার জ্ঞান না থাকায় বেশিরভাগ যাত্রীই ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটে না। একদিনে ভেন্ডিং মেশিন ফাঁকা থাকলেও কাউন্টারে দীর্ঘ সারি দেখা যায়।
Advertisement
গত কয়েকদিন সরেজমিনে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। যাত্রীরা বলছেন, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটতে ঝামেলা মনে হয়। তাই কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করেন তারা।
স্টেশনের কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করলে প্রথমে যাত্রীকে অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এরপর কাউন্টারে গেলে যাত্রীর মোবাইলে ওটিপি দেওয়া হয়। এরপর টিকিট কেটে যাত্রী গন্তব্যে যেতে পারেন। আর ভেন্ডিং মেশিনে মোবাইল বা কম্পিউটারে অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটার মতোই মেশিনের স্ক্রিনে টাচ করে কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে টিকিট কাটতে পারেন।
টিকিট কাটার এসব পদ্ধতি সহজভাবে বুঝিয়ে দিতে পাশেই রয়েছে রেলের অনলাইন টিকিট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সহজ ডট কমের তথ্য বুথ। এখান থেকে অনেকেই জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেন।
Advertisement
কাউন্টার থেকে টিকিট কাটা রোমান মিয়া বলেন, মেশিন থেকে টিকিট কাটিনি কখনও। কি হয়, কি না হয় জানি না। এজন্য কাউন্টার থেকে নিয়ে নিলাম।
আরেক যাত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, মেশিন থেকে কখনও টিকিট কাটিনি। কীভাবে কাটতে হয় তাও জানি না। প্রতিবার যখন বাড়ি যাই কাউন্টার থেকেই টিকিট কাটি।
তবে যারা ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটতে অভ্যস্ত তাদের দুই-একজনকে টিকিট কাটতে দেখা গেছে। রিহাম হুসাইন নামের এক যাত্রী বলেন, কাউন্টারে অনেক ভিড়। সেখানে লাইনে দাঁড়ানোর চেয়ে ভেন্ডিং মেশিন থেকে সহজেই টিকিট কেটে নিলাম।
কমলাপুর রেল স্টেশনের এই বুথে দায়িত্বরত সহজ ডট কমের স্টাফ শিহাব বলেন, যেসব যাত্রীদের রেজিস্ট্রেশন করা নেই আমরা তাদের সাহায্য করি। বুথ থেকে রেজিস্ট্রেশন করে যাত্রীরা কাউন্টারে গিয়ে টিকিট কাটেন। অনেকে ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটতে চায় না। তারা সিস্টেম বুঝে না এজন্য কাউন্টারে ভিড় করে। দেখা যায় কাউন্টারে ভিড় লেগে আছে আর ভেন্ডিং মেশিন ফাঁকা। যাত্রী চাইলেই ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটতে পারে।
Advertisement
ঢাকা বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরিফ জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রীদের সুবিধার জন্যই আমরা ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করেছিলাম। অনেকেই স্টেশনে আসার আগেই অনলাইনে টিকিট কেটে তারপর স্টেশনে আসেন। যারা স্টেশন থেকে টিকিট কাটেন তারা কাউন্টারে চলে যান। জ্ঞান না থাকার কারণে যাত্রীরা মেশিনে টিকিট কাটতে আগ্রহী হচ্ছেন না। তবে সেখানে আমাদের বুথ আছে, যারা যাত্রীদের টিকিট কাটতে সহায়তা করে। যাত্রীদের সচেতন করতে আমরা আরও প্রচারণা বাড়াবো।
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে চারটি, বিমানবন্দর স্টেশনে দুটি, চট্টগ্রাম স্টেশনে দুটি, সিলেট স্টেশনে একটি, কক্সবাজার স্টেশনে একটি, রাজশাহী স্টেশনে দুটি, খুলনা স্টেশনে একটি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে একটি ও রংপুর স্টেশনে একটি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। এছাড়া আরও বেশ কিছু রেল স্টেশনে পর্যায়ক্রমে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে রেলওয়ের।
এনএস/এমআইএইচএস/জেআইএম