ভোলায় বাস ও সিএনজি শ্রমিকের মধ্যে মারামারিকে কেন্দ্র করে জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের আজ দ্বিতীয় দিন। সোমবার (৫ মে) সকাল থেকে ৫ রুটে বন্ধ রয়েছে বাস চলাচল।
Advertisement
বাস শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে জেলার ৫ রুটের হাজার হাজার যাত্রী। ছোট যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে তাদের। পাশাপাশি গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের দাবি যাত্রীদের।
সোমবার ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাসস্ট্যান্ডে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোলায় চলছে বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের ডাকা অনির্দিষ্টকালের বাস ধর্মঘট। এতে বন্ধ রয়েছে ভোলা-চরফ্যাশন, ভোলা-তজুমদ্দিন, ভোলা-দৌলতখান, ভোলা-ইলিশা ও ভোলা-ভেদুরিয়া রুটসহ ৫ রুটের বাস চলাচল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ৫ রুটের কয়েক হাজার যাত্রী। ধর্মঘটের সুযোগে ছোট যানবাহনগুলো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বলেও অভিযোগ যাত্রীদের।
যাত্রী মো. মঞ্জু, কামাল ও সাদ্দাম হোসেন জানান, তারা বরিশাল থেকে ভোলার বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল বাস স্ট্যান্ডে এসেছেন। লালমোহন যাবেন, কিন্তু বাস বন্ধ। এখন বিকল্প যানবাহন হিসেবে মাইক্রোবাসে করে যাবেন। তবে বাসের চেয়ে ভাড়া দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। তারপরও যেতে হবে কিছু করার নাই।
Advertisement
যাত্রী সুমা বেগম ও নুর নাহার বেগম জানান, বাস বন্ধ থাকায় নারী যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে। ব্যাটারিচালিত বোরাকে পুরুষের পাশে গাদাগাদি করে বসতে হচ্ছে। যাত্রীদের সিট ৫ থেকে ৬ জনের হলেও এখন চালকরা ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী নিচ্ছে। তাও আবার ভাড়া নিচ্ছে বাসের চেয়ে ১০০ টাকা বেশি।
তবে মাইক্রোবাসের চালক মো. শিপন ও বোরাকের চালক আকবর জানান, বাস বন্ধ থাকার কারণে যাত্রী একটু বেশি। বাসের চেয়ে বেশি ভাড়া না নিলেতো পোষাবে না। কারণ অন্যান্য সময় আমরা ভোলা থেকে চরফ্যাশন রিজার্ভ যাই সাড়ে ৪ হাজার টাকায়, এখন ওই টাকাতো তুলতে হবে। আর সবাইতো যেতে চায়, তাই ২-১ জন যাত্রী বেশি নিই।
ভোলা জেলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান জানান, বাস শ্রমিকদের ওপর হামলার কঠোর বিচার না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস বন্ধ থাকবে। আমাদের কোনো শ্রমিক বাস চালাবে না।
তিনি আরও জানান, সিএনজি শ্রমিকরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। তারা কারণে অকারণে আমাদের বাস শ্রমিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। এর কঠোর বিচার হওয়া উচিত।
Advertisement
ভোলা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাহাদাত হাসনাইন পারভেজ জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের সঙ্গে রাত থেকেই আলোচনা করছেন তারা। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত সমাধান হবে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
রোববার বিকেল আনুমানিক ৫টার দিকে ভোলার বাংলাবাজার সংলগ্ন এলাকায় রাস্তায় সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে মারামারি হয় বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে। এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে ভেদুরিয়া, কুঞ্জেরহাট ও লালমোহনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে বাস ও সিএনজি শ্রমিকদের মধ্যে। উভয় পক্ষে অন্তত ৮ জন আহত হয়। এরপর সন্ধ্যার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস ধর্মঘটের ডাক দেয় ভোলা বাস ও মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এফএ/এএসএম