দেশজুড়ে

নির্মাণ কাজ কমায় ভাটা পড়েছে বালু ব্যবসায়

নির্মাণ কাজ কমায় ভাটা পড়েছে বালু ব্যবসায়

মাদারীপুরে গত বছরের তুলনায় নির্মাণ কাজ কমে যাওয়ায় কমেছে বালু বিক্রি। এতে করে ভালো যাচ্ছে না বালু ব্যবসায়ীদের দিন। এছাড়াও নির্মাণ কাজে জড়িত রাজমিস্ত্রিদেরও কাজ কমেছে। ফলে তারাও আর্থিক সংকটে পড়েছেন। পেশা বদলে বিভিন্ন কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

Advertisement

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর জেলা প্রবাসী অধ্যুষিত। তাই গত কয়েক বছর ধরে শহরের পাশাপাশি গ্রামগুলোতেও পাকাঘর নির্মাণের প্রবণতা বেড়েছে এখানকার বাসিন্দাদের। কিন্তু হঠাৎ করে এ বছর সব ধরনের নির্মাণ কাজ কমে গেছে। এতে করে জেলার বালু ব্যবসায়ীদেরও বিক্রি কমেছে। পাশাপাশি অনেক রাজমিস্ত্রির কাজ কমেছে।

বালু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর বিক্রি বেশি ছিল, তাই বালুর দামও কম ছিল। তারাপুরি বালু প্রতিফিট ২৮ থেকে ৩০ টাকা ও সিলেট বালু প্রতিফিট ৬২ থেকে ৬৫ টাকা ছিল। কিন্তু বর্তমানে বালু বিক্রি তুলনামূলক অর্ধেকে নেমেছে। পাশাপাশি বালুর দামও বেড়েছে। বর্তমানে তারাপুরি বালু প্রতি ফিট ৩০ থেকে ৩২ টাকা ও সিলেট বালু ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে এই বালুর মধ্যেও প্রকারভেদে দাম কম-বেশি আছে।

আরও পড়ুন-

Advertisement

নির্মাণ কাজ কমে যাওয়ায় কমেছে রড বেচাকেনা অনিশ্চয়তা-সংকটে ভালো নেই আবাসন ব্যবসা দাম কমিয়েও ক্রেতা মিলছে না সিমেন্টের

মাদারীপুর শহরের তরমুগরিয়া (বালুঘাট) এলাকার মেসার্স রাসেল ট্রেডার্সের মালিক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, হঠাৎ করে মাদারীপুরে বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ কাজ কমে গেছে। ফলে বালু বিক্রিও অর্ধেকে নেমেছে। এতে করে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের বালু বিক্রিসহ নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সকল জিনিসপত্রের বাজার খারাপ যাচ্ছে। তাছাড়া বালু বিক্রি কম হলেও এ বছর বালুর দাম বেড়েছে।

আরেক ব্যবসায়ী শহরের শকুনি এলাকার মদিনা ট্রেডার্সের মালিক মো. সবুজ বলেন, গত কয়েক বছর বালু বিক্রি অনেক ভালো ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে বালু বিক্রি অনেক কমেছে। এ বছর খুব অল্প নির্মাণ কাজ চলছে। তাই বিক্রিও কম। ব্যবসাও ভালো যাচ্ছে না।

হাজীর হাওলা গ্রামের রাজমিস্ত্রি মো. আজগর হোসেন বলেন, বর্তমানে আমাদের কাজ অনেক কমে গেছে। গত বছরও কাজের চাপ অনেক ছিল। কিন্তু এ বছর তেমন একটা কাজ নেই। বর্তমানে যেগুলো করছি সেগুলো পুরোনো কাজ। নতুন তেমন একটা কাজ পাইনি।

শহরের থানতলী এলাকার রাজমিস্ত্রির সহযোগী মো. শাওন বলেন, বর্তমানে কোনো কাজ নেই। তাই অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। আমার মতো অনেক রাজমিস্ত্রি নানা ধরনের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, বিগত সরকারের আমলে মাদারীপুর জেলায় আওয়ামী লীগের সমর্থকের সংখ্যা বেশি ছিল। বহুতল ভবনসহ নানা নির্মাণ কাজ আওয়ামী লীগের লোকজনই বেশি করতেন। বর্তমানে তারা অনেকেই জেলে ও পলাতক আছেন। তাই আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মাদারীপুর জেলায় নির্মাণ কাজে ভাটা পড়েছে। পাশাপাশি এই জেলায় প্রবাসীর সংখ্যাও বেশি থাকায় গ্রামগুলোতেও বহুতল ভবনসহ নানা স্থাপনা নির্মাণ করা হতো। কিন্তু বতর্মানে নানা পরিস্থিতির কারণে তারাও নির্মাণ কাজ কম করাচ্ছেন।

মাদারীপুর বণিক সমিতির কার্যকরী সদস্য মো. সোহাগ হোসেন বলেন, হঠাৎ করে মাদারীপুরে নির্মাণ কাজ কমেছে। গতবছরও নির্মাণ কাজ বেশি ছিল। যেখানে সেখানে রাস্তাঘাটে ইট বালু দেখা যেতো। কিন্তু বর্তমানে তা দেখা যায় না। তাই বালু ব্যবসায়ীদের বালু বিক্রি অনেক কমে গেছে।

এফএ/জেআইএম