নারায়ণগঞ্জ শহরের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবার জন্য অন্যতম হলো ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট খানপুর সরকারি হাসপাতাল। এই হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। দুই বছরের জন্য প্রকল্পটি হলেও ছয় বছরেও পুরোপুরিভাবে শেষ হয়নি কাজ।
Advertisement
তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে কিছুদিনের মধ্যে নতুন ভবনের আংশিক বুঝিয়ে দেওয়া হবে। বাকিটা পরবর্তীতে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমানের চেষ্টায় সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালটিকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার আশ্বাস দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ২১ মার্চ একনেকের বৈঠকে এ হাসপাতালকে ৫০০ শয্যায় উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়।
পরবর্তীতে ২০১৮ সালের জুন মাসে হাসপাতালটি ৫০০ শয্যায় উন্নীতকরণের লক্ষ্যে নতুন ১৫ তলা ভবনের প্রথম ধাপে সাততলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পুরো প্রকল্পের জন্য মোট ১৩০ কোটি টাকার বরাদ্দের অনুমোদন দেয় সরকার। যেখানে সাততলা ভবন নির্মাণে অনুমোদিত প্রকল্প মূল্য ৭০ কোটি টাকা।
Advertisement
শুরুতেই প্রকল্পটির দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে জিকে বিল্ডার্সকে ঠিকাদারি দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠানটি নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রকল্পের ২৪ মাসের মধ্যে শেষ করতে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্মাণ শুরুর ১৯ মাসে প্রকল্পটির মাত্র ২০ শতাংশ কাজের অগ্রগতি হয়। পরবর্তী এক বছরে মাত্র ৫ শতাংশ অগ্রগতি হয়ে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বরাদ্দকৃত ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের মোট ২৫ শতাংশ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
এরমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের মালিক জিকে শামীম ২০২০ সালে গ্রেফতার হলে প্রকল্প থেকে তার কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঢালি কন্সট্রাকশনের আওতায় প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়।
গণপূর্ত অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জানান, দুবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও মহামারি করোনা এবং বরাদ্দ সংকটের কারণে নির্দিষ্ট সময় ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি।
ফলে সবশেষ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এ সময়ের মধ্যেও ভবনটি পুরোপুরি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ফলে আরেক দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
Advertisement
এ বিষয়ে গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোতালেব বলেন, আমাদের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ। ভেতরে ফিটিংসের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। রোজার ঈদের আগে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি ভিজিট দিয়েছি। সে সময় কিছু বিষয়ে সমস্যা তুলে ধরলে সেগুলো সংশোধন করে দেওয়া হয়। ঈদের আগেই এটি বুঝে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তাদের জনবল সংকটের কারণে তখন বুঝে নেয়নি। তারা বলেছে, ঈদের পর হস্তান্তর বুঝে নেবে। আশা করছি সপ্তাহখানেকের মধ্যে তারা আমাদের থেকে নতুন ভবনটি বুঝে নেবেন।
তবে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল বাশার বলেন, ভবনটি আপাতত আমাদের চারতলা পর্যন্ত বুঝিয়ে দেবে বলে কথা হয়েছে। ভবনে এখন পর্যন্ত ইলেকট্রিকের কাজ বাকি। এরপর বাকি কাজ শেষ করে বুঝিয়ে দেবে। গত সরকারের বাজেটের টানাপোড়নের কারণেই মূলত কাজের ধীরগতি হয়েছে।
মোবাশ্বির শ্রাবণ/জেডএইচ/এএসএম