ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামে কৃষকদের নিয়ে বজ্রপাত সচেতনামূলক কর্মসূচি পালন করেছে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম (এসএসটিএএফ)।
Advertisement
শুক্রবার (২ মে) সংগঠনটি নবাবগঞ্জে মাঠে মাঠে ধান কাটা কৃষকদের নিয়ে বজ্রপাত সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও কৃষকদের দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
সংগঠনটি জানিয়েছে, গত ২৮ এপ্রিল এক দিনে বজ্রপাতে সারাদেশে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ জনই কৃষিকাজের সঙ্গে জড়িত কৃষক মারা গেছেন।
এ সময় মাঠে কাজ করা কৃষকদের তিন দফা নির্দেশনা পালন করার জন্য পরামর্শ দেন এসএসটিএএফ সদস্যরা। পাশাপাশি বজ্রপাত হলে কৃষকেরা কীভাবে নিজেদের নিরাপদ রাখবেন সেই কৌশলও শেখান তারা।
Advertisement
কৃষকদের জন্য দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো-
১. কোনোভাবেই খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টিতে ভেজা ও বৃষ্টির সময় গাছের নিচে থাকা যাবে না।
২. ফসলের মাঠ, নদী-নালা, পুকুর, ডোবা, জলাশয়ে থাকলে দ্রুত আশপাশের কোনো ভবন কিংবা কংক্রিটের ছাউনির নিচে আশ্রয় নিতে হবে। এমনটি না পাওয়া গেলে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে হবে।
আরও পড়ুন
Advertisement
৩. বৃষ্টির সময় ছেলে-মেয়েদের খোলা মাঠে খেলাধুলা থেকে বিরত রাখতে হবে এবং নিজেরাও বিরত থাকতে হবে।
বজ্রপাতে আক্রান্ত হলে করণীয় বিষয়গুলো তুলে ধরে ডা. মেসবাহ উদ্দিন কৃষকদের বলেন, খোলা আকাশের নিচে কাজ করার সময় জুতা পায়ে রাখতে হবে, বজ্রপাত হলে নিচু হয়ে কানে আঙ্গুল দিয়ে বসে পড়তে হবে। তবে আকাশে কালো মেঘ দেখা গেলে ও বৃষ্টি হলে গাছের নিচে অবস্থান করা বিপজ্জনক। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান নিতে হবে।
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাশিম মোল্লা সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে দ্রুত মাঠে মাঠে আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানান। পাশাপাশি বছরের মার্চ থেকে জুন- এ চার মাস কৃষকদের মধ্যে বজ্রপাত সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পরামর্শ দেন।
সংগঠনটির সভাপতি ড. কবিরুল বাশার বলেন, বজ্রপাত বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ দুইটি। বৈশ্বিক উষ্ণতা বেড়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গাছ বিশেষ করে মাঠের উঁচু গাছ কেটে ফেলা। হাওরাঞ্চলের মাঠে আগেও তেমন গাছ ছিল না। এখন অন্যান্য এলাকার গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে মাঠে বা খোলা জায়গায় যেসব মানুষ থাকেন বজ্রপাতের এক কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহী উঁচু জিনিস হিসেবে সেই মানুষকেই পায়। মানুষ না থাকলে মাঠের গবাদি পশু। ফলে সেখানেই বজ্রপাত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এসএসটিএএফের যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, সাংবাদিক খালিদ হোসেন সুমন, বিপ্লব ঘোষ, সচেতন নাগরিক ফোরামের মুখপাত্র শিল্পী ইহসান আননূর, শেখ সাঈদ হোসাইন, মারুফ আহমেদ ভূইয়া, শাহাবুদ্দিন হোসেন প্রমুখ।
আরএএস/কেএসআর/এমএস