বৈশাখের তীব্র গরমে ঝালকাঠি পৌরসভার বেশিরভাগ এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানি সংকট। প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ না পেয়ে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে হাহাকার শুরু হয়েছে বাসিন্দাদের। দিনের বেশিরভাগ সময়ই মিলছে না পৌরসভার সরবরাহ করা পানি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
Advertisement
শহরের ৯টি ওয়ার্ডেই রয়েছে এ সমস্যা। বিশেষ করে শহরের ৩ নম্বর কৃষ্ণকাঠি ও ৯ নম্বর কলাবাগান-সিটিপার্ক এলাকার বাসিন্দাদের হাহাকার বেশি। প্রতিদিন লাইনে দাঁড়িয়ে পানি নিতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌর এলাকার কাঠপট্টি, কলাবাগান, কৃষ্ণকাঠি, গুরুধাম ও লঞ্চঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দারা জানান, পানির জন্য সবাইকে প্রতিদিন রীতিমতো যুদ্ধ করতে হচ্ছে। অনেক সময় দীর্ঘ অপেক্ষার পরও এক ফোঁটা পানি পাওয়া যায় না। অথচ তারা নিয়মিত পানির বিল ও পৌরভার ট্যাক্স পরিশোধ করছেন।
Advertisement
পৌর এলাকার বাসিন্দারা জানান, ঝালকাঠি শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকার গুরুদাম, কবিরাজ বাড়ি রোড, মুসলিম পাড়া, বিশ্বরোড, ব্রাকমোড়, জেলেপাড়া, বাসস্ট্যান্ড, পেট্রোলপাম্প, সুতালড়ি, বেদেপল্লি, কাঠপট্টি, লঞ্চঘাট, কলাবাগান, পৌর খেয়াঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মিলছে না পৌরসভার সরবরাহ করা পানি। প্রায় দুই বছর ধরে দিনের বেশিরভাগ সময়ই পানি পাচ্ছেন না এসব এলাকার বাসিন্দারা। চলতি গ্রীষ্মে পানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
শহরের কলাবাগান এলাকার বাসিন্দা সেলিনা বেগম জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে যান্ত্রিক ত্রুটির অজুহাতে কর্তৃপক্ষ আমাদের সঠিকভাবে পানি সাপ্লাই দিচ্ছে না। এতে আমাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
কৃষ্ণকাঠি এলাকার এইচএম রিয়াজ খান বলেন, ‘দুমাস ধরে সাপ্লাই পানি নেই। যা আসে তাতে অজুও করা যায় না।’
মজিবর হাওলাদার নামের আরেকজন বলেন, ‘বর্তমানে পানি সাপ্লাইয়ের যে করুণ অবস্থা, তা বিগত একযুগেও দেখা যায়নি।’
Advertisement
পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ুন কবীর সাগর। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঘনবসতি ওয়ার্ডে পানি ব্যবস্থাপনা খুবই দুর্বল। ট্যাংকে পানি তোলার জন্য মোটরও ঠিকভাবে কাজ করছে না।’
এ বিষয় ঝালকাঠি পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখার দায়িত্বে) কামরুল হাসান বলেন, নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের জন্য সনাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে আধুনিকায়ন করা হবে। খুব শিগগির এ সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি আরও জানান, ঝালকাঠি পৌরসভায় বর্তমানে আট হাজার ৫০০ পানির গ্রাহক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় তিন হাজার গ্রাহক চরম সংকটে রয়েছেন। পানি সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করে সার্বক্ষণিক পানি সরবরাহের চেষ্টা চলছে।
মো. আতিকুর রহমান/এসআর/এমএস