যুক্তরাষ্ট্রের তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে চীনে। পণ্য পরিবহনের তথ্য বলছে, চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানি এখন এতটাই ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে যে, চীনা ক্রেতারা তা গ্রহণ না করে অন্য দেশ থেকে জ্বালানি সংগ্রহে ঝুঁকছেন।
Advertisement
জাহাজ ট্র্যাকিং সংস্থা কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ ফেব্রুয়ারির পর থেকে চীনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো এলএনজি প্রবেশ করেনি। সবশেষ একটি জাহাজ টেক্সাসের কর্পাস ক্রিস্টি বন্দর থেকে ছেড়ে এসে চীনের ফুজিয়ান প্রদেশের ঝাংঝো বন্দরে পৌঁছেছিল। এরপরই বেইজিং যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করে, যার মধ্যে এলএনজির ওপর ১৫ শতাংশ শুল্কও ছিল।
আরও পড়ুন>>
ট্রাম্পের শুল্কে কঠিন পরীক্ষার মুখে চীনের প্রতিবেশীরা শুল্কের চাপ, চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত গেলো বোয়িংয়ের প্লেন যুক্তরাষ্ট্রকে খুশি করতে চাওয়া দেশগুলোর প্রতি পাল্টা ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি চীনেরচীন এখন অস্ট্রেলিয়া, কাতার ও মালয়েশিয়া থেকে এলএনজি আমদানি করছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিকভাবে সবচেয়ে বড় এলএনজি সরবরাহকারী, ২০২৪ সালে চীনের এলএনজি আমদানির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু ২০২৫ সালে এ পর্যন্ত তা নেমে এসেছে মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশে।
Advertisement
এছাড়া, চলতি শীতে তীব্র ঠান্ডা না থাকায় অভ্যন্তরীণ চাহিদাও ছিল কম। সাংহাইভিত্তিক জ্বালানি বিনিয়োগ সংস্থা ডেভেনপোর্ট এনার্জির চেয়ারম্যান টবি কপসন জানান, শিল্পখাত থেকেও চাহিদা কম ছিল। কারণ, শুল্ক আরোপ চাহিদা সংকোচনের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিএমন পরিস্থিতি আগে একবার দেখা গিয়েছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে। ২০১৯ সালে চীন-যুক্তরাষ্ট্র প্রথমবারের মতো বাণিজ্যযুদ্ধে জড়ালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনে এলএনজি রপ্তানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
চীনা কোম্পানি সিনোপেক ও পেট্রোচায়নার মতো প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের এলএনজি প্রকল্পগুলোর সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করেছিল, যা ওই প্রকল্পগুলোর অর্থায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন নতুন কোনো চুক্তির সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
কপসনের কথায়য়, চীনারা এখন যুক্তরাষ্ট্রকে এড়িয়ে চলছে। তারা শুধু বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে এমনটি করছে।
Advertisement
সূত্র: নিক্কেই এশিয়াকেএএ/