ছুটির দিনটা যেন ছোট্ট একটা মুক্তির দিন। কাজের চাপ, যানজটের ধোঁয়া আর শহরের ব্যস্ত জীবনের ভেতর হাঁসফাঁস করতে থাকা মন খুঁজে ফেরে একটু সবুজ, একটু খোলা আকাশ। লম্বা ট্রিপের সময় বা বাজেট না-ও থাকতে পারে কিন্তু ঢাকার আশেপাশেই আছে কিছু চমৎকার স্পট। যেখানে অল্প সময়ে, অল্প খরচে মিলে যাবে প্রশান্তির পরশ। চলুন ঘুরে আসা যাক সেইসব কাছের ঠিকানাগুলো।
Advertisement
ঢাকা থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে পুবাইলের গ্রিন ভিলেজ। পাকা রাস্তা পেরিয়ে যখন চারপাশে চোখ মেলে ধরে ধানক্ষেতের সবুজ; তখন মনও যেন শুদ্ধ হতে থাকে। গ্রামের বাড়ির মতো পরিবেশ, পুকুরের জলে আলোছায়ার খেলা আর নরম বাতাস সব মিলে এক পরিপূর্ণ শান্তির ঠিকানা। মাত্র ২০০-৩০০ টাকায় এখানে কাটিয়ে দিতে পারবেন একদিনের অবকাশ।
পদ্মার পাড়, দোহারনদী মানেই এক অনন্ত টান। দোহার উপজেলার পদ্মার পাড়ে সেই টান আরও গভীর হয়। চায়ের কাপ হাতে নদীর পাড়ে বসে থাকা কিংবা নৌকায় চেপে মাঝনদীতে চলে যাওয়া—সবই যেন ছেলেবেলার গল্পের মতো সহজ। ঢাকার গাবতলী বা সায়েদাবাদ থেকে লোকাল বাসে মাত্র ৫০-১০০ টাকায় পৌঁছে যাওয়া যায় এই সৌন্দর্যের দ্বারে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যেন এক লুকানো রত্ন। ক্যাম্পাসের মাঝখানে বিস্তীর্ণ হ্রদ, তার পাড়ে উড়ে বেড়ানো শত শত হাঁস। বিশেষ করে শীত এলে এই দৃশ্য যেন আরও মনকাড়া হয়ে ওঠে। সকাল সকাল গেলে ঠান্ডা বাতাস আর শিশিরভেজা ঘাসের গন্ধে মন ভরে যাবে। ঢাকার গুলশান, বনানী, উত্তরা এলাকা থেকে বাসে করে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায়।
Advertisement
আরও পড়ুন
বারো আউলিয়ার দরবারে যা দেখবেন ঘুরে আসুন বিমান বাহিনী জাদুঘর পানাম নগরী, সোনারগাঁওযদি মনে হয় ছুটির দিনে একটু ইতিহাসের ছোঁয়া দরকার, তাহলে পানাম নগরী আদর্শ গন্তব্য। শত বছরের পুরোনো বাড়ির সারি, সময়ের আঁচড়ে ক্ষয়প্রাপ্ত দেওয়াল সবই যেন হারিয়ে যাওয়া এক বাংলার গল্প বলে। প্রবেশ টিকিটও অল্প আর ঢাকা থেকে মাত্র ঘণ্টাখানেকের পথ।
জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’ রিসোর্ট গন্তব্য, চন্দ্রা-বাইপাইলযাদের একটু বিলাসী অবকাশের ইচ্ছে, তাদের জন্য আছে চন্দ্রা-বাইপাইলের দারুণ সব রিসোর্ট। সারাহ রিসোর্ট, ভাওয়াল রিসোর্ট, সোহাগ পল্লীর মতো রিসোর্টগুলোতে অল্প মূল্যের ডে প্যাকেজ নিয়ে কাটানো যায় দারুণ এক ছুটির দিন। বন্ধু বা পরিবারের সাথে সুইমিং পুলে নেমে মজা করা কিংবা সবুজ মাঠে হাঁটা—সবই যেন মনে করিয়ে দেয়, জীবন আসলে উপভোগের জন্যই।
যা করবেনস্পটগুলোর যে কোনো একটিতে যেতে খুব ভোরে বের হলে পৌঁছতে সময় কম লাগবে। হালকা খাবার সঙ্গে রাখলে সময় আর টাকার সাশ্রয় করা সম্ভব। ভ্রমণের আগে বাস-ভাড়া বা রিসোর্ট বুকিং যাচাই করে নিন। কেননা খরচ কিছুটা ওঠা-নামা করে। ক্যামেরা বা মোবাইলে সুন্দর মুহূর্তগুলো ধরে রাখুন। বাড়তি পোশাক বা প্রয়োজনীয় ওষুধ নিতে ভুলবেন না।
Advertisement
ঢাকার আশেপাশের ছোট্ট ভ্রমণগুলোই হতে পারে আপনার জীবনের নতুন রং। অল্প খরচে, অল্প সময়ে মনের জানালা খুলে দিতে পারে একটি নির্ভেজাল ছুটির দিন।
এসইউ/এমএস