ফের ভারত-পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। ভারত অভিযোগ করেছে, পাকিস্তানি সেনারা নিয়মিত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে আসছে। জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সামরিক নিয়ন্ত্রণ সীমানা পরিস্থিতি এখন উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
Advertisement
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিয়মিত সীমান্তে গুলি চালিয়ে ভারতীয় সেনাদের উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির খবরে দাবি করা হয়েছে। তবে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
গত সপ্তাহে পহেলগামে ২৬ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঘটনা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে একটি। ২০১৯ সালে কাশ্মীরের ওপর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পর এটাই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন পর্যটক। এ ঘটনায় পাকিস্তান জড়িত বলে অভিযোগ করেছে চিরবৈরী ভারত। যদিও হামলার সঙ্গে কোনোরকম সংশ্লিষ্টতার দায় অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
Advertisement
এতে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাতেও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়।
সে সময় ভারত দাবি করে, পাকিস্তানের সেনারা প্রথমে গুলি ছুড়েছে, তারা পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে বেসামরিক জনগণের ওপর কোনো গোলাগুলি করা হয়নি বলে উভয় পক্ষ থেকেই নিশ্চিত করা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তুতমারি গালি এবং রামপুর সেক্টরের বিপরীতে অবস্থিত এলাকায় বিনা উসকানিতে গুলিবর্ষণ শুরু করে। আমাদের সেনারাও উপযুক্ত ছোট অস্ত্র দিয়ে কার্যকরভাবে জবাব দিয়েছে।
ভারতের দাবি, গত তিন রাতে তিন বার পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলি চালিয়েছে। এছাড়া ভারত সিন্ধু নদের পানি বন্টনের চুক্তিও স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। এতে করে দুদেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেছে।
Advertisement
এছাড়া ভারত হঠাৎ কিছু না জানিয়েই আজাদ-কাশ্মীরের ঝিলম নদীর পানি ছেড়ে দিয়েছে। এতে আজাদ কাশ্মীরের রাজধানী এবং সবচেয়ে বড় শহর মুজাফফরাবাদে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ভারতশাসিত পহেলগামে হামলার পর ভারতের সস্তা রাজনৈতিক কৌশল পুনরায় প্রকাশ পাচ্ছে।
মুজাফফরাবাদের কাছে পানির প্রবাহ হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন হাতিয়ান বালা জেলায় বন্যা পরিস্থিতির জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। মসজিদগুলোতে ঘোষণার মাধ্যমে স্থানীয়দের সতর্কও করা হয়েছে। এদিকে নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
ভারতশাসিত অনন্তনাগ থেকে পানি প্রবেশ করে চাকোঠি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। দুই দেশের মধ্যে থাকা সিন্ধু নদের একটি উপনদী হলো ঝিলম নদী।
আরও পড়ুন: না জানিয়েই নদীর পানি ছেড়ে দিয়েছে ভারত, আজাদ কাশ্মীরে সতর্কতা জারি ভারতকে বিলওয়ালের হুঁশিয়ারি/ সিন্দুতে আমাদের পানি অথবা আপনাদের রক্ত বইবে ভারতের পক্ষে কি পাকিস্তানে সিন্ধু নদীর পানি প্রবাহ আটকানো সম্ভব?পাকিস্তানি গণমাধ্যম দুনিয়া নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক নিয়ম এবং পানি চুক্তির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। পাকিস্তানের জনগণ এই কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
টিটিএন