দেশজুড়ে

দেশের নানান প্রান্তে যাচ্ছে খুলনার তরমুজ

দেশের নানান প্রান্তে যাচ্ছে খুলনার তরমুজ

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে খুলনার তরমুজ। চাহিদাও বেশ। তুলনামূলক এবার খুলনা অঞ্চলে তরমুজের চাষ ভালো হয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন জেলায় তরমুজ সরবরাহে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দাকোপ, ডুমুরিয়া, রূপসা ও বটিয়াঘাটা উপজেলায় তরমুজের চাষ বেশি হয়। এবার এক হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে।

খুলনার বিভিন্ন অঞ্চলের তরমুজ চাষিরা জানান, এবছর প্রথম দিকে বৃষ্টি কম হওয়ায় তরমুজ চাষ ভালো হয়েছে। তবে কিছুদিন আগে হঠাৎ বৃষ্টি হওয়ায় ঠান্ডা পড়ে তরমুজ চাষে একটু জটিলতা তৈরি হয়। মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় দাম কম পাওয়া গেছে। তবে গতবারের থেকে এবার তরমুজ ব্যবসায় সিন্ডিকেট কম। অনেক আড়তদার সরাসরি তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

পাকিজা, বিগ পাকিজা, বিগ ফ্যামিলি, বিগ পাঞ্জা, এশিয়ান ২, সাকুরা, সুইট ড্রাগন, জাম্বু জাগুয়ার, ওয়ার্ল্ড কুইন, আস্থা, এশিয়া সুপার, বাংলালিংকসহ বিভিন্ন জাতের তরমুজের চাষ হয় বেশি।

Advertisement

তরমুজের গাছ লাগানোর পর পরিপক্ব ফল পেতে ৬৫-৭০ দিন পর সময় লাগে। পরিপক্ব তরমুজের ভেতরের বীজ বেশি কালো হয়।

দাকোপের তরমুজ চাষি আকরাম মিয়া বলেন, এবছর শীত কম থাকায় বেশি ফলন হয়েছে। পাশাপাশি গরম ও বৃষ্টি কম হওয়ায় তরমুজের স্বাদও তুলনামূলকভাবে আগের বছরের তুলনায় ভালো।

বটিয়াঘাটার তরমুজ চাষি হিল্লোল বলেন, আমাদের এ জায়গার তরমুজ ভালো হয়। ব্যবসায়ীরা আমাদের মাঠের তরমুজ বেশি খোঁজেন। তবে রোদে পুড়ে তরমুজ চাষ করে লাভ আহামরি হচ্ছে না।

ডুমুরিয়ার তরমুজ চাষি হরিদাস পাল জানান, এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় তরমুজ চাষ ভালো হয়েছে। তবে পানি স্বল্পতার কারণে সেচ করতে সমস্যা হয়েছে। এবার প্রতি বিঘা জমির তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে।

Advertisement

খুলনার কদমতলা এলাকার ট্রান্সপোর্ট ব্যবসায়ীরা জানান, খুলনার তরমুজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, উখিয়া, ফেনী, মুন্সিগঞ্জ, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রামে বেশি যাচ্ছে তরমুজ। রাতভর তরমুজ লোড করেন ব্যবসায়ীরা। ভোর হওয়ার আগে তরমুজ নিয়ে ট্রাকচালকরা রওনা দেন বিভিন্ন অঞ্চলের উদ্দেশ্যে।

ইব্রাহিম ট্রান্সপোর্টের পরিচালক আজাদ বলেন, তরমুজ সরবরাহ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটছে আমাদের। প্রতিদিন কম করে হলেও ৫-৭টা ট্রাক লোড করে তরমুজ পাঠাতে হচ্ছে বিভিন্ন অঞ্চলে। গভীর রাত পর্যন্ত তরমুজ লোডিং আর আনলোডিং হয়। এ সময়টা আমাদের ব্যস্ততায় পাড় করতে হয়।

পরিবহন ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, তরমুজের সময় ট্রাক মালিকদের ব্যস্ত সময় পাড় করতে হয়। খুলনা থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে তরমুজ যায়। রাত-দিন ব্যবসায়ীদের সঙ্গেই কথা বলে কাটাতে হয়।

খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, এবার বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। তবে কিছুদিন আগে বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা পড়াতে কৃষকরা কিছুটা বিপাকে পড়েন। বৃষ্টির কারণে ব্যবসায়ীদের কাছে থেকে বিঘা প্রতি দামও কম পেয়েছেন তরমুজ চাষিরা।

আরিফুর রহমান/জেডএইচ/জেআইএম