জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্টতই গাজায় ‘অনাহার অভিযান’ ঘোষণা করেছেন। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয় সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ) প্রধান মাইকেল ফাখরি এর আগে আল জাজিরার সঙ্গে গাজার ওপর ইসরায়েলের সম্পূর্ণ অবরোধ সম্পর্কে কথা বলেছিলেন।
Advertisement
তিনি জানিয়েছেন, এই অবরোধের কারণে ৫০ দিনেরও বেশি সময় ধরে ওই অঞ্চলে সব ধরনের খাদ্য, পানি এবং ওষুধ প্রবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রায় দুমাস ধরে সেখানে কোনো ধরনের খাবার প্রবেশ করতে পারছে না। এতে তীব্র অনাহারে দিন কাটাচ্ছে অসহায় ফিলিস্তিনিরা।
ফাখরি বলেন, ২০২৪ সালের মার্চ এবং চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গাজায় অনাহার এবং দুর্ভিক্ষের বিষয়টিকে গণহত্যার প্রেক্ষাপটে স্বীকৃতি দেয় এবং আমরা আবারও এটি দেখতে পাচ্ছি। গত ৩ মার্চ নেতানিয়াহু ঘোষণা করেছিলেন যে ইসরায়েল গাজায় সব ধরনের পণ্য এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করবে। এটা ৫০ দিনেরও বেশি আগের ঘটনা এবং এই পরিস্থিতি এখনও চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে এমন কোনো শর্ত নেই যেখানে কেউ বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দিতে পারে। সুতরাং ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মানবিক সহায়তাকে দর কষাকষির একটি উপায় হিসেবে ব্যবহার করছে। ফাখরি বলেন, এটা আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং এর কোনো ব্যতিক্রম নেই।
Advertisement
ফাখরি জানিয়েছেন, ইসরায়েল গাজায় ‘মানবসৃষ্ট’ এবং ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অনাহার’ পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, সেখানে মজুত থাকা খাবার একেবারেই শেষ হয়ে গেছে। গাজায় জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সরবরাহ প্রয়োজন।
এদিকে গাজায় তীব্র খাদ্য সংকটের মধ্যেও সেখানে নতুন করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বেশ কিছু মেডিক্যাল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, গাজাজুড়ে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকাল থেকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে কমপক্ষে আরও ৪৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় নতুন করে হামলায় নিহত আরও ৪৫ গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ২৯ গাজায় বোমা হামলা অব্যাহত, প্রাণ হারিয়েছে আরও ৫২ জনদখলদার বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় নিহতের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রায় ১৮ মাস ধরে সেখানে সংঘাত চলছে। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সেখানে কমপক্ষে ৫১ হাজার ৪৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৬ জন।
টিটিএন
Advertisement