যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে ১০ হাজার কোটি ডলারের (১০০ বিলিয়ন) বেশি মূল্যের অস্ত্র সরবরাহের একটি চুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত ছয়টি সূত্রের বরাতে সংস্থাটি বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) জানিয়েছে, আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের আগেই এ চুক্তি চূড়ান্ত হতে পারে।
Advertisement
রয়টার্স জানায়, লকহিড মার্টিন, আরটিএক্স করপোরেশন, বোয়িং, নর্থরপ গ্রুম্যান এবং জেনারেল অ্যাটমিকসের মতো শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিগুলো এ চুক্তির আওতায় থাকছে। ট্রাম্পের সফরসঙ্গী হিসেবে এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শীর্ষ নির্বাহীর যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
আরও পড়ুন>>
এবারও সৌদি আরবেই হবে ট্রাম্পের প্রথম বিদেশ সফর? সৌদি আরবের কাছে লেজার-গাইডেড রকেট বিক্রিতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র গাজা পুনর্গঠনে আরব নেতাদের পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান যুক্তরাষ্ট্রেরসূত্রগুলো জানায়, চুক্তির আওতায় সৌদি আরবকে সি-১৩০ পরিবহন প্লেন, ক্ষেপণাস্ত্র এবং রাডার সিস্টেমসহ নানা রকম উন্নত অস্ত্র সরবরাহ করা হতে পারে।
Advertisement
তবে সৌদি আরব লকহিড মার্টিনের তৈরি অত্যাধুনিক এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত কেবল ন্যাটোর মিত্র দেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অস্ট্রেলিয়াকে এ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে।
রয়টার্স জানায়, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সৌদি আরবের সঙ্গে একটি নতুন প্রতিরক্ষা চুক্তির চেষ্টা করেছিলেন, যার লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্বাভাবিক করা। সেই প্রস্তাবিত চুক্তিতে চীনা বিনিয়োগ সীমিত করা এবং বেইজিং থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধের বিষয়টিও ছিল। তবে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত চুক্তিতে এসব শর্ত থাকবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়।
হোয়াইট হাউস কিংবা সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চুক্তিতে যুক্ত কোনো অস্ত্র নির্মাতা কোম্পানিও রয়টার্সের প্রশ্নের জবাব দেয়নি।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ডের পর ২০১৮ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিতে ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করে। ২০২১ সালে মার্কিন কংগ্রেস সৌদি আরবের কাছে আক্রমণাত্মক অস্ত্র বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, বিশেষ করে ইয়েমেন যুদ্ধে দেশটির ভূমিকার প্রেক্ষাপটে।
Advertisement
তবে ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বৈশ্বিক জ্বালানি সংকট দেখা দিলে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে সৌদি আরবের প্রতি কঠোর অবস্থান শিথিল করে। সবশেষ, ২০২৪ সালে গাজা পুনর্গঠনে সৌদি আরবকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে যুক্তরাষ্ট্র।
কেএএ/