ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য মাছরাঙা টেলিভিশনের সাবেক বার্তা সম্পাদক সাগর সারওয়ার ও এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার আলামত ও নথি পোড়ার দাবি নিয়ে নানামুখী বক্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
Advertisement
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ডিআরইউ কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল এ উদ্বেগ জানান।
ডিআরইউর নেতারা বলেন, মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ মামলার তদন্ত চলমান ও অগ্রগতি আছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষ নয় মাস সময়ের আরজি জানায়। শুনানি নিয়ে আদালত ছয় মাস সময় মঞ্জুর করেন। এ সময় ৫ আগস্টের পরে নথি পুড়ে যাওয়া নিয়ে আদালতের ভেতরে ও বাইরে গণমাধ্যমের সামনে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর প্রাথমিক বক্তব্যের কারণে সাগর-রুনির মামলার নথি ও আলামতের বর্তমান অবস্থা ও মামলাটির বিচার নিশ্চিত নিয়ে দ্বিধায় পড়েন সাংবাদিকরা। এরপরই পুলিশ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করা হয় যে এ মামলার কোন নথি পোড়েনি। কিন্তু উচ্চ আদালত বিভিন্ন এজেন্সির অভিজ্ঞদের সমন্বয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সকে মামলার তদন্ত শেষ করতে আবারও ছয় মাস সময় দিয়েছেন।
তারা বলেন, এর আগে গত ১৫ এপ্রিল মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমার তারিখ ১১৭ বার পেছানোর আদেশ দেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এম এ আজহারুল ইসলাম। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন থাকলেও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় এই সময় দেওয়া হয়। নিঃসন্দেহে সময় বৃদ্ধি নিয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার আদালতের এবং আদালত মামলার সর্বোৎকৃষ্ট বিচার নিশ্চিতের প্রয়োজনেই সময় দেন।
Advertisement
আরও পড়ুন:
সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি পুড়ে গেছে তথ্যটি সঠিক নয়২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজা বাজারে নিজ বাসায় তাদের শিশুপুত্রের সামনে নির্মমভাবে খুন হন এই সাংবাদিক দম্পতি। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজ ১৩ বছর পেরিয়ে গেছে, তদন্তের কোন ধরনের অগ্রগতি নেই। হত্যাকারীদের এখনো সনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়নি। মেহেরুন রুনির মা নুরুন্নাহার মির্জা মৃত্যুবরণ করলেও এখনো বিচারের আশা ছাড়েননি সাগরের বয়োবৃদ্ধ মা সালেহা মুনির ও সাগর-রুনির একমাত্র পুত্র মাহীর সারওয়ার মেঘ। এ অবস্থায় ১৩ বছরের এই দীর্ঘ অপেক্ষা আরও বাড়তে থাকা উদ্বিগ্ন সাংবাদিক ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
ডিআরইউ নেতারা মনে করেন, দেশের দক্ষ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বড় বড় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করেছে। তবে সাগর-রুনি হত্যার কোন কুলকিনারা তারা করতে পারবে না এটা অবিশ্বাস্য। তাই আর কালক্ষেপণ না করে দ্রুততম সময়ে সাগর-রুনি হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত খুনিদের বিচারের আওতায় আনার জন্য ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে আবারো জোর দাবি জানানো হচ্ছে।
এনএইচ/এসএনআর/জেআইএম
Advertisement