দেশজুড়ে

ভিড় বেড়েছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়

ভিড় বেড়েছে সাগরকন্যা কুয়াকাটায়

সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের লীলাভূমি কুয়াকাটা। ১৮ কিলোমিটারের নৈসর্গিক এ সাগর সৈকত দূর থেকে ভ্রমণপিপাসুদের যেন দুহাত তুলে ডাকে। গত কয়েকদিনে এ সৈকতে পর্যটকদের পদচারণা বেড়েছে। বিশেষত, মে দিবসের ছুটির সঙ্গে শুক্র-শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিনের ছুটিতে প্রকৃতির একটু সান্নিধ্য পেতে পর্যটকদের অনেকে ছুটে এসেছেন কুয়াকাটায়।

Advertisement

ঈদুল ফিতর পরবর্তী প্রায় এক মাস পর কুয়াকাটায় পর্যটকদের এমন ঢল নামতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার (১ মে) সকাল থেকেই সৈকতে পর্যটকদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে।

কুয়াকাটা-ঢাকা যাতায়াতে একসময় ১২টি ফেরি থাকলেও বর্তমানে সেই দুর্গমতা আর নেই। পুরো পথ এখন ফেরিবিহীন। একসময় ঢাকা থেকে যেতে ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা সময় লাগলেও এ পথ পাড়ি দিতে এখন সময় লাগে মাত্র ৫-৬ ঘণ্টা। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার সঙ্গে কুয়াকাটার যোগাযোগ এখন খুবই সহজ ও আরামদায়ক। তাই ভ্রমণপিপাসুদের অনেকের পছন্দ এখন এই সাগর সৈকত।

মে দিবসের ছুটি ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে সৈকতে। ফিসফ্রাই, চটপটি, রাখাইন মার্কেট, লেম্বুরবন, গঙ্গামতিসহ নানা স্পটে পর্যটকদের পদচারণা। সেখানকার পর্যটন খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শুক্রবারও কুয়াকাটায় পর্যটকদের ভিড় থাকবে। শনিবার থেকে সেটা কমতে শুরু করবে।

Advertisement

কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানিয়েছেন, পর্যটকদের ভিড়ে চাপ বেড়েছে হোটেল-মোটেলগুলোতেও। দীর্ঘ এক মাস হাতেগোনা বুকিং পেলেও মে দিবসের ছুটি ঘিরে বৃহস্পতিবার হোটেল-মোটেলগুলোর বুকিং ছিল প্রায় ৮০-৯০ শতাংশ। শুক্র ও শনিবারের অগ্রিম বুকিং রয়েছে অর্ধেকের বেশি।

সেখানকার হোটেল বেস্ট সাউদার্ন লিমিটেডের পরিচালক মিনহাজ শুভ জানান, তাদের হোটেলের ৩৬টি কক্ষের সবগুলোই বুকিং রয়েছে। বৃহস্পতিবারের তুলনায় শুক্র ও শনিবারের বুকিং কিছুটা কম। তবে পর্যটক পাওয়ায় অনেকটা খুশি তারা। পর্যটকদের সেবার মান আরও বাড়াতে চেষ্টা করছেন বলে জানান তিনি।

দ্বিতীয় শ্রেণির হোটেলগুলোতে কিছু কম বুকিং রয়েছে। হোটেল সাউথ স্টারে কথা বলে জানা যায়, তাদের মোট ২৮টি রুমের ২৫টি বুকিং হয়েছে। আগামী দুদিনের (শুক্র ও শনিবার) জন্য বুকিং কিছুটা কম। অগ্রিম বুকিং কম হলেও দিনশেষে তারাও ভালো বুকিং পেয়ে থাকেন।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটার (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের মানসম্মত সেবা দেওয়া ও চাহিদা মতো বিনোদনের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে আমরা এখনো পিছিয়ে আছি। নানাভাবে সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করা হয়। তারপরও অসংখ্য ভ্রমণপিপাসুর পছন্দের তালিকায় থাকে কুয়াকাটা। আমরাও সীমাবদ্ধতা নিয়েও চেষ্টা করছি মানসম্মত সেবা দেওয়ার। এখন আশানুরূপ পর্যটক থাকায় ব্যবসায়ীরা খুশি।

Advertisement

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, শ্রমিক দিবসের বন্ধে কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে বাড়তি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাস্তায় যানজট এড়াতে চেকপোস্টগুলোতে টহল বাড়ানো হয়েছে।

আসাদুজ্জামান মিরাজ/এমকেআর