চীনের কুনমিং মেডিকেল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। রোববার (২০ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে আয়োজিত ‘চীন-বাংলাদেশ পিপল-টু-পিপল এক্সচেঞ্জ ইয়ার: ইউনান এডুকেশন অ্যান্ড হেলথ প্রমোশন’ শীর্ষক প্রদর্শনীতে এ সমঝোতা হয়।
Advertisement
চীনের ইউনান প্রদেশের সরকার ও ঢাকায় অবস্থিত চীনা দূতাবাস এবং সহ-আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। এসময় বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন, চীনের ইউনান প্রদেশের গর্ভনর ওয়াং ইউবো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলাম, সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমীন, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় চীন-বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন অধ্যায়ের শুরু হলো। বিএমইউ এক্ষেত্রে বিরাট অবদান রাখতে সক্ষম হবে। যৌথ গবেষণা, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিনিময়, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, আধুনিক চিকিৎসা প্রযুক্তি শেয়ার এবং স্কলারশিপ প্রাপ্তির সুযোগ তৈরি হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই উদ্যোগ বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে জনস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ এবং চিকিৎসা প্রশিক্ষণ বিষয়ে চীনের অগ্রগতি বাংলাদেশকে কার্যকরভাবে সহায়তা করতে পারবে। এই অনুষ্ঠান দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কে আরও গভীর করবে এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করবে। রোগ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ, রোগ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম, জনস্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণা ও নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, টেকনিক্যাল ট্রেনিং, যৌথ গবেষণা কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবে। চীনের ইউনান প্রদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে পারস্পরিক উন্নয়ন ও বোঝাপড়া গড়ে তোলায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে এই অনুষ্ঠান।
Advertisement
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিত্বরা এ ধরনের আয়োজন চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে বলে উল্লেখ করেন। এই আয়োজন শিক্ষাখাতে সহযোগিতা যেমন ইউনান প্রদেশের সঙ্গে যৌথ গবেষণা, এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম, স্কলারশিপ ও শিক্ষা উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হওয়া, স্বাস্থ্য খাতে স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব হবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।
এসব চুক্তি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং জনগণের মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবে উল্লেখ করে আলোচকরা বলেন, ইউনান প্রদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে অভিজ্ঞতা ও উন্নয়নের ধারা বাংলাদেশের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বিশেষ করে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার পরিবেম গড়ে তোলা, ইউনান প্রদেশের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা শেয়ার করা, ছাত্র ও শিক্ষকদের এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম পরিচালনা, স্বাস্থ্যসেবা প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ব্যবস্থা জোরদার করা, দুই দেশের সরকারের, বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং দূতাবাসের সমন্বয়ে যৌথ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা এবং সর্বোপরি দুই দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী ও ফলপ্রসূ করতে এই উদ্যোগ বিরাট ভূমিকা রাখবে।
এসইউজে/এসএনআর/জেআইএম
Advertisement