দেশজুড়ে

হত্যার পর তোষকে পেঁচিয়ে রাখা হয় স্ত্রীর মরদহে

হত্যার পর তোষকে পেঁচিয়ে রাখা হয় স্ত্রীর মরদহে

স্ত্রীকে হত্যার পর আগুনে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি। তার পরিচয় এখনো জানা যায়নি।

Advertisement

রোববার (২০ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে আশুলিয়ার টঙ্গাবাড়ি এলাকার কালাম মাদবরের মালিকানাধীন ৫ তলা ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম রোকসানা আক্তার (২৮)। তিনি আশুলিয়ায় ন্যাচারাল ইনডিগো লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানায় অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন।

এদিকে পলাতক স্বামীর পেশা সম্পর্কেও বাড়ির মালিক কিংবা প্রতিবেশীরা নিশ্চিত করতে পারেননি। তবে তিনি আন্তঃজেলা বাস কিংবা ভেকুর (এক্সকেভেটর) কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

Advertisement

বাড়ির মালিক কালাম মাদবর জানান, ফজরের আগে ঘুম থেকে উঠে আগুন বা ধোঁয়ার গন্ধ পেয়ে নিচতলায় নেমে দেখা যায়, ফ্ল্যাটের ছিটকিনি বাইরে থেকে বন্ধ করা। রোকসানার ফ্ল্যাটের দরজা খুলতেই দেখা যায় ঘরের ভেতর ধোঁয়া। তখন প্রতিবেশীরা এসে পানি ছিটিয়ে আগুন নিভিয়ে ফেলে। পরে পেঁচিয়ে রাখা তোষক সরাতেই বের হয়ে আসে রোকসানার নিথর দেহ। বিছানায় রক্তের দাগ, গলায় আঘাতের চিহ্ন। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

প্রতিবেশীরা জানান, পাঁচ বছর ধরে স্ত্রীর কাছে যান না স্বামী। হঠাৎ করে তিনদিন আগে আশুলিয়ায় স্ত্রীর ভাড়া করা ওই বাসায় যান স্বামী। কিন্তু রোকসানা তাকে ঘরে ঢুকতে দিতে চাননি। তখন স্বামী জানান দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন, তার মাথা ফেটেছে। ঘরে ঢোকার জন্য আকুতি মিনিতি করতে থাকেন তিনি। পরে বাড়ির মালিক ও অন্যান্যরা রোকসানাকে বোঝালে তিনি রাজি হন।

অভিযোগ রয়েছে, এই পাঁচ বছর ধরে স্ত্রীর কোনো খোঁজ খবর নেন না স্বামী। ভরণ পোষণও দিতেন না। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলে আসছিল।

আশুলিয়া থানা পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে নিহতের স্বামী মাদকাসক্ত এবং তাদের মধ্যে পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে কলহ ছিল। কলহের জেরে স্ত্রীকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

Advertisement

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহীনুর কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন স্বামী। আগুনের নাটক সাজিয়ে ঘটনা অন্য দিকে প্রভাবিত করতে চেয়েছিল হত্যাকারী। আমরা তদন্ত করছি। পুলিশ কাজ করছে। মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পলাতক স্বামীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

মাহফুজুর রহমান নিপু/জেডএইচ/জেআইএম