ঐচ্ছিকভাবে হলেও অভিন্ন পারিবারিক আইন এখনই প্রবর্তনের সুপারিশ করেছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রধান কারণই পরিবারকে ঘিরে ব্যক্তিগত বা ব্যক্তিবাচক যে আইনগুলো রয়েছে সেগুলো। এক্ষেত্রে একটা বড় সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করেন কমিশনের সদস্যরা। শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কমিশন প্রধান শিরিন পারভিন হকসহ অন্যরা এ মত ব্যক্ত করেন। গণমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এর সিনিয়র ফেলো মাহিন সুলতান বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন অনেক পুরনো এবং সমন্বিত একটি দাবি। জাতীয় মহিলা পরিষদ দীর্ঘদিন যাবৎ এ নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু কেউ এতদিন কর্ণপাত করেনি।
Advertisement
তিনি বলেন, আমরা জানি বিয়ে ও বিয়ে সংক্রান্ত অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে যুক্ত (ভরণপোষণ, শিশুর অধিকার, সন্তানের অভিভাবকত্ব) সবগুলো বিষয়কে যদি একটি আইনের আওতায় নিয়ে আসা না যায় তাহলে সমস্যাগুলো চলতেই থাকবে।
মাহিন সুলতান বলেন, আমরা মনে করি অভিন্ন পারিবারিক আইন যদি এখনই করা হয়, এটা অন্য ধর্মের জন্য ঐচ্ছিকভাবে হতে পারে। পর্যায়ক্রমে সবার স্বার্থে এটি বাধ্যতামূলক হতে হবে। কারণ সমতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হবে এবং আমাদের সংবিধান বলছে আইনের চোখে সবাই সমান। এখানে কোনো বৈষম্য করা চলবে না।
ঐচ্ছিকভাবে হলেও অভিন্ন পারিবারিক আইন এখনই প্রবর্তন করা হোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি চাইলে দোয়া পড়েও বিয়ে করতে পারি আবার আদালতে গিয়েও করতে পারি। সেটার জন্য আমার অপশন থাকবে।
Advertisement
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান শিরিন পারভিন হক এসময় বলেন, বর্তমান পারিবারিক আইন ধর্ম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সেটা মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ যে ধর্মই হোক। যারা ধর্মীয় বিধানের মধ্যে বিয়ে করতে চায় না, সিভিল আইনের অধীনে বিয়ে করতে চায় তাদের জন্য অপশন রাখা হোক। এক্ষেত্রে যে ধর্মেরই হোক না কেন কিংবা ধর্মে বিশ্বাসী না হলেও যেন সুযোগটা নিতে পারে।
রাতারাতি পারিবারিক আইন বাতিল করা যাবে না। ১৯৬১ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের আমলে এ আইনটি হয়েছিল। তারপর আর কেউ সাহস করে এ আইনে হাত দেয়নি। আমরা মনে করি ইউনূস ভাইয়ের নেতৃত্বে সেটা হতে পারে।
এমইউ/এএমএ/এমএস
Advertisement