দেশজুড়ে

সব সংস্কার করেন, কিন্তু সংবিধানে হাত দেবেন না: বিএনপি নেতা

সব সংস্কার করেন, কিন্তু সংবিধানে হাত দেবেন না: বিএনপি নেতা

‘যৌক্তিক’ বলে কোনো শব্দ রাজনীতিতে চলে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে মৌলভীবাজারের ইম্পিরিয়েল মেডিকেল কলেজের মাঠে এক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এম নাসের রহমান বলেন, দেশ এখন দুটি ধারায় বিভক্ত। একটা বলে ‘নির্বাচন, নির্বাচন, নির্বাচন’। আরেকটা বলে ‘সংস্কার, সংস্কার, সংস্কার’। এখন সংস্কার প্রয়োজন, এটা ঠিক। কিন্তু এর জন্য সীমাহীন সময় দেওয়া যাবে না। আজকাল আরেকটা নতুন শব্দ বের হয়েছে, এটা বেশি ইউজ করে একটি ইসলামি দল। শব্দটি হলো ‘যৌক্তিক’। এখন তাদের যদি জিজ্ঞাসা করি যৌক্তিকতা কতদিন, এর কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। এই যৌক্তিকতা কতদিন একমাস, ছয়মাস, একবছর না তিনবছর- আসলে যৌক্তিকতা কত, এর কোনো উত্তর তাদের কাছে নেই। শব্দ একটাই শিখেছে বলে ‘যৌক্তিক’। যৌক্তিক বলে কোনো শব্দ রাজনীতির ইতিহাসে চলে না।

Advertisement

বিএনপির এই নেতা বলেন, সময়ের প্রয়োজনে যেগুলো দরকার, সেগুলো সংস্কার করতে হবে। কিন্তু সংবিধান ছাড়া সবগুলো সংস্কারই করেন। সংবিধান সংস্কার একমাত্র সংসদ ছাড়া কেউ করতে পারবে না। বাকি যা সংস্কার আছে করে ফেলেন। কোনো অসুবিধা নেই। দুর্নীতি দমনের সংস্কার, পুলিশে সংস্কার, প্রশাসনে সংস্কার, জুডিসিয়ারি সংস্কার, যত সংস্কার আছে করেন। কিন্তু সংবিধানের সংস্কারে হাত দিতে পারেন না। এনসিপিকে ইঙ্গিত করে নাসের রহমান বলেন, এই ছেলেরা একেক সময় একেক মামাবাড়ির আবদার করে। কি ধরনের আবদার, প্রথমে বলে ছিল ভোটারের ভোটের বয়স ১৭ বছরে নামিয়ে আনার প্রস্তাব। কিন্তু এটা তো সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়। আরও কি বলেছে, দ্বিতীয় রিপাবলিক ঘোষণা দেওয়া। দ্বিতীয় রিপাবলিক কি? এটা কি ২৭ বছরের ছেলেরা বুঝে।

তিনি আরও বলেন, আসলে এই ছেলেদের পেছনে দুজন তাত্ত্বিক গুরু আছেন। এই দুজন গুরু আগে তাদের বলে দেন কখন কি বলতে হবে। তারা বলে এই সংবিধান বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান করতে হবে। তাদের বয়সই হলো সংবিধানের বয়সের অর্ধেক। আর তারা সংবিধান নিয়ে কথা বলে, তারা কারা সংবিধান নিয়ে কথা বলার? সংবিধানে অনেক কিছু পরিবর্তন আনতে হবে, তবে তা নির্বাচনের পর। সংসদে আলোচনা করে পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু তারা আগেই চায়। কেন? এটা বুঝতে কি রকেট সাইন্স জানতে হবে? বিএনপি ইনশাআল্লাহ আড়াইশো সিট নিয়ে ক্ষমতায় যাবে, আর তাদের ডর (ভয়) এখানেই। তিনি বলেন, আড়াইশো বাদ দেন, ২০১ সিট পেলেই তো বিএনপি সংবিধান সংস্কারের অধিকার রাখে। কিন্তু আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার বলেছেন, বিএনপি একতরফা কিছু করতে যাবে না। সব দলের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। চাঁদনিঘাট ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেনের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য আব্দুল মুকিত, মো. ফখরুল ইসলাম, বকসি মিছবাউর রহমান, মুজিবুর রহমান মজনু, বিএনপি নেতা আয়াছ আহমদ, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক মারুফ আহমেদ প্রমুখ।

ওমর ফারুক নাঈম/জেডএইচ/এএসএম

Advertisement