জাতীয়

সদরঘাটে যাত্রীচাপ স্বাভাবিক, হাতিয়া-ভোলার লঞ্চে যাত্রী বেশি

সদরঘাটে যাত্রীচাপ স্বাভাবিক, হাতিয়া-ভোলার লঞ্চে যাত্রী বেশি

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামীকাল সোমবার (৩০ মার্চ) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। তাই শেষ মুহূর্তে বাসে, ট্রেনে ঢাকা ছাড়ছেন ঘরমুখো মানুষ। তবে তেমন ভিড় নেই সদরঘাটে। যাত্রীর অপেক্ষায় দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চগুলো। পর্যাপ্ত যাত্রী হলে সন্ধ্যার দিকে লঞ্চগুলো ঘাট ছেড়ে যাবে। লঞ্চ মালিক-শ্রমিকরা জানিয়েছেন, এবার ঈদের ছুটিতে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে চিরচেনা ভিড় ছিল না। অধিকাংশ লঞ্চে অগ্রিম টিকিটও বিক্রি হয়নি। ঘাটে গিয়েই টিকিট পেয়েছেন যাত্রীরা। এছাড়া যাত্রীর চাপ কম থাকায় লঞ্চে কেবিনের ভাড়াও স্বাভাবিক সময়ের মতোই ছিল। তবে ভোলা ও নোয়াখালীর হাতিয়ার লঞ্চগুলোতে বরাবরের মতোই যাত্রী চাহিদা রয়েছে। এ দুটি গন্তব্যের লঞ্চে সকাল থেকেই যাত্রী ওঠা শুরু হয়েছে। অধিকাংশ লঞ্চ সন্ধ্যার আগেই ঘাট ছাড়বে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা। তারা জানান, ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণাঞ্চলগামী লঞ্চের যাত্রী কমেছে। এ অঞ্চলের মানুষ এখন বাসেই কম সময়ে গন্তব্যে যেতে পারেন। তবে ভোলা ও হাতিয়ায় লঞ্চ ছাড়া বিকল্প নেই। তাই বরাবরের মতোই এ দুটি গন্তব্যে চাপ রয়েছে।  সদরঘাট টার্মিনালে যাত্রীর জন্য অপেক্ষায় ছিল তাসরিফ-১ নামের একটি লঞ্চ। তিন তলা এ লঞ্চের গন্তব্য নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়া। দেখা যায়, লঞ্চের সামনে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে যাত্রীদের ডাকছেন কর্মীরা। যাত্রীরাও কোনো দরদাম করে টিকিট কেটে লঞ্চে উঠছেন। কারো কেবিন দরকার হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে তা ভাড়া নিচ্ছেন। বিকেল পর্যন্ত লঞ্চটিতে ৯টি কেবিনো ফাঁকা দেখা গেছে। দুই হাজার ২০০ টাকা দিয়ে পরিবারের চার সদস্যের জন্য ডাবল কেবিন নিয়েছেন সোহেল রানা। আলাপকালে তিনি বলেন, এখন ঈদ মৌসুম হলেও কেবিনে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয়নি। বরং আগাম বুকিং ছাড়া ঘাটে গিয়ে কেবিন পাওয়া যাবে, এমনটা ধারণাই ছিল না। 

Advertisement

 তাসরিফ লঞ্চের কেবিন ইনচার্জ আরিফ হোসেন। তিনি বলেন, এবার ঈদে টানা নয় দিনের ছুটি পেয়েছেন সরকারি চাকরিজীবীরা। দীর্ঘ ছুটি থাকার কারণে বাড়ি ফেরার অনেক সময় পাওয়ায় এক সঙ্গে যাত্রীদের চাপ পড়ছে না। স্বস্তিতে ঈদযাত্রা করতে পারছেন যাত্রীরা। তবে গত কয়েকদিন গুলিস্তান থেকে সদরঘাট পর্যন্ত তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অন্যদিকে রোববার দুপুর ২টায় সরজমিনে দেখা যায়, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল গিয়ে চিরচেনা সেই চিত্র চোখে পড়েনি। পন্টুনে বাঁধা সারি সারি লঞ্চ। চাঁদপুরগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীর কিছুটা চাপ থাকলেও বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা রুটের লঞ্চগুলো অনেকটাই ফাঁকা। যাত্রীদের টিকিট কেনার হিড়িক নেই। বিকেল ও সন্ধ্যায় কিছুটা যাত্রীর চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করেন লঞ্চের কর্মচারীরা।

 বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিটিসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীর প্রায় ৩৫ শতাংশ নৌপথে যেতেন। এখন সেটি প্রায় ১৫ শতাংশে নেমে এসেছে। তখন ঢাকা থেকে ৪৩টি নৌপথে ২২৫টির মত লঞ্চ চলাচল করত। এখন প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৬৫টি লঞ্চ চলে বিভিন্ন পথে। ঢাকা-শৌলা-মুলাদী-ঢাকা পথে যাত্রী পরিবহন করে এম ভি মিতালী-৪। এ লঞ্চে যাত্রী আনিসুর রহমান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর তাদের অঞ্চলের অধিকাংশ যাত্রী বাসে যাতায়াত করেন। আর যাদের সঙ্গে কিছু মালামাল থাকে তারাই মূলত লঞ্চে যাতায়াত করেন। এম ভি মিতালী-৪ এর ব্যবস্থাপক আরিফুল হক বলেন, গত বৃহস্পতিবার থেকে লঞ্চে যাত্রী চাপ ছিল। গতকালও সদরঘাট টার্মিনালে প্রচুর যাত্রী ছিল। তবে সে তুলনায় আজ কিছুটা কম। যারা গ্রামে যাওয়ার কথা, তাদের অধিকাংশজনই আগে চলে গেছেন।  এমএমএ/এমএইচআর

Advertisement