দেশজুড়ে

টেঁটাবিদ্ধ করে মেছো বিড়াল হত্যা, ভিডিও ভাইরাল

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় একটি মেছো বিড়ালকে টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। প্রাণীটি পালিয়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করলেও হামলাকারী টেঁটা শরীরে বিদ্ধ করে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখে। একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর টেঁটা সরানো হয়।

Advertisement

শুক্রবার (২১ মার্চ) দুপুরে দামুড়হুদা উপজেলার ধান্যঘরা গ্রামের বটতলা পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

স্থানীয়রা জানান, কুড়ালগাছি ইউনিয়নের ধান্যঘরা গ্রামের তৌহিদুল ফকিরের ছেলে আলমগির ধানক্ষেতে ও বাড়ির আশপাশে মেছোবিড়াল দেখতে পান। তার আশঙ্কা ছিল, এটি তার হাঁস খেয়ে ফেলতে পারে। তাই কয়েকদিন টেঁটা নিয়ে পাহারা বসান তিনি। শুক্রবার দুপুরে ধানক্ষেতে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় মেছো বিড়ালটি সামনে এলে তিনি পেছন থেকে টেঁটাবিদ্ধ করেন। এরপর আহত প্রাণীটিকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তার ওপরে নিয়ে আসেন। দীর্ঘক্ষণ মেছো বিড়ালটি বাঁচার জন্য চেষ্টা করলেও তাকে শক্ত করে আটকে রাখা হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হলে প্রাণীটিকে ফেলে রেখে চলে যান তিনি।

কুড়ালগাছি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার শাহ মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন বলেন, আলমগির ফকিরের বাড়ির পাশে ধানক্ষেত থাকায় সেখানে বন্যপ্রাণীর যাতায়াত ছিল। সে ভুল বুঝে এমন কাজ করেছে। সে গরিব মানুষ, তাই ক্ষমা করে দেওয়া হোক।

Advertisement

চুয়াডাঙ্গার পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ি’র প্রতিষ্ঠাতা বখতিয়ার হামিদ বিপুল বলেন, মেছোবিড়াল একটি প্রায় বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী, যা মানুষের কোনো ক্ষতি করে না। এটি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। এমন নিষ্ঠুরতা মেনে নেওয়া যায় না। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে হত্যাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

তিনি আরও বলেন, এর আগেও আমরা ওই এলাকায় সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করেছি, লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার লাগিয়েছি। তারপরও এমন ঘটনা ঘটল, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র বলেন, বিষয়টি আমি বনবিভাগকে জানিয়েছি। মেছোবিড়াল হত্যা করা ঠিক হয়নি, এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আলমগিরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

Advertisement

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, ২০১২ অনুযায়ী, কোনো বন্যপ্রাণী হত্যা করলে সর্বোচ্চ এক বছর কারাদণ্ড বা জরিমানা, কিংবা উভয় দণ্ড হতে পারে।

হুসাইন মালিক/এমএন/এমএস