বিপিএল ২০২৪ আসরের প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে মুমিনুল হককে নেয়নি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। পরে রংপুর রাইডার্স শেষ মুহূর্তে দলে টেনেছিল বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে। কিন্তু ২০২৫ আসরে বিপিএলে সুযোগই পাননি মুমিনুল।
Advertisement
শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকটেই নয়, সাদা বলের ক্রিকেটেও উপেক্ষিত খেলোয়াড় মুমিনুল। এবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও (ডিপিএল) তাকে নিতে উৎসাহ দেখায়নি কোনো বড় দল। পরে অনেক কম পারিশ্রমিকে যোগ দেন আবাহনী লিমিটেডে। কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে মুমিনুল বুঝিয়ে দিচ্ছেন- শুধু লাল বল নয়, ক্যারিয়ারের প্রথম দিকের মতো এখনো ৫০ ওভারের ফরম্যাটেও দল জেতাতে পারেন তিনি। আবাহনীর হয়ে শেষ তিন ম্যাচেই মুমিনুল রেখেছেন কার্যকর অবদান। আজ শুক্রবার গাজী গ্রুপের বিপক্ষে ম্যাচসহ এ তিন ম্যাচের দুটিতেই দল জেতানো পারফরম্যান্সের কারণে মুমিনুলের হাতে উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।
আসরের প্রথম দিকে তেমন সুবিধা করতে পারেননি মুমিনুল। প্রথম ৩ ইনিংসে (২৭, ৯ ও ২) মোট ৩৮ রান করার পর গেল ১৫ মার্চ বিকেএসপি মাঠে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৭৪ বলে ৪ ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে ৯২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ম্যাচ জেতান মুমিনুল। পরের ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে দল জেতাতে না পারলেও ৩৫ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়ে সহায়ক ভূমিকা রাখেন তিনি।
শুক্রবার বিকেএসপি মাঠে বৃষ্টিসিক্ত আবহাওয়ায় খানিক বোলিং সহায়ক পিচে ৪ উইকেট (৩৮ রানে) দখল করে গাজী গ্রুপকে দুইশোর নীচে (১৯৯) বেঁধে রাখতে মুমিনুল পালন করেন প্রধান ভূমিকা। এরপর ব্যাট হাতে শেষ দিকে ২৫ বলে ২৪ রান করে আবাহনীর জয়ের (২ উইকেটে) নায়ক বনে গিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার পান মুমিনুল। শেষ ৩ ইনিংসে এমন উজ্জ্বল পারফরম্যান্স (৯২, ৩৫* ও ৩৯ রানে ৪ উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ২৫ বলে ২৪) মুমিনুলকে আবার আলোচনায় নিয়ে এসেছে।
Advertisement
ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটের নিয়মিত খোঁজ-খবর যারা রাখেন, তাদের সবার মুখে এখন প্রশ্ন; মুমিনুলকে কেন শুধু টেস্ট ক্রিকেটার ভাবা হয়, কেন সাদা বলে সেভাবে মূল্যায়ন করা হয় না? অথচ ৫০ ওভারের ফরম্যাটেও মুমিনুলের পারফরম্যান্স যথেষ্ঠ ভালো। এখনো প্রিমিয়ার লিগে ম্যাচ জেতানো পারফর্মার । যাকে নিয়ে এত কথা সেই মুমিনুল কী ভাবছেন? বিকেএসপি থেকে ঢাকায় ফেরার পথে জাগো নিউজের সঙ্গে মুঠোফোনে মুমিনুলের স্বভাবসুলভ ভাবলেশহীন অভিব্যক্তি, ‘আমার নিজেকে প্রমাণের আর কিছু নেই। আমি কী পারি, কী পারি না, এটা নতুন করে দেখিয়ে দেওয়ার কিছু আছে বলে মনে করি না। আমার কাজ খেলা, মাঠে ভালো পারফর্ম করা। আমি সেই চেষ্টাই করি। সেটা যে ফরম্যাটেই হোক।’ আজ দারুণ বোলিং করলেন। ৪ উইকেট পেয়ে গাজী গ্রুপকে দুইশোর নিচে আটকে রাখতে বড় ভূমিকা রাখলেন। আপনার অনুভূতি কী? এমন প্রশ্নের উত্তরও বেশ হালকা হয়েই দিলেন মুমিনুল।
৩৩ বছর বয়সী মুমিনুল বলেন, ‘বৃষ্টি ভেজা উইকেট তো একটু ট্রিকি (কঠিন) ছিল। বোলারদের বল মুভ ও টার্ন করেছে। আমি তা কাজে লাগিয়েছি।’
ম্যাচ শেষ করে আসতে না পারার আক্ষেপও শোনা গেল মুমিনুলের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আগের ম্যাচে ৩৫ রানে নটআউট ছিলাম। আজও যদি ম্যাচ শেষ করে ফিরতে পারতাম, সেটা ভালো লাগতো আরও।’
এআরবি/এমএইচ/এএসএম
Advertisement