ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলার সঙ্গে জড়িত নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাময়িক বহিষ্কার এবং ক্যাম্পাসে হামলার মদতদাতা শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। এ ঘটনায় সাধুবাদ জানিয়ে এ দুই বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজে জুলাই হামলার ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত করে বাদ পড়ে যাওয়া অপরাধীদের যুক্ত করে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্ফুলিঙ্গ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকেই শুরু হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলমান অহিংস কোটা সংস্কার আন্দোলনে ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী লীগ তাদের সন্ত্রাসী পেটোয়া বাহিনী ছাত্রলীগকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপরে লেলিয়ে দেয়। ওই পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনার কারণেই এ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, যা আমাদের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে গণঅভ্যুত্থানের দিকে ধাবিত করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ছাত্রলীগ ও তাদের সন্ত্রাসী বহিরাগত আওয়ামী লীগেরা মিলে শিক্ষার্থীদের যেভাবে মধ্যযুগীয় হামলা করে তা যে কোনো বিবেকবান মানুষকে ক্ষুব্ধ করে তুলতে বাধ্য করে।
আরও পড়ুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সহিংসতায় জড়িত ঢাবির ১২৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ টিএসসিতে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড বিস্ফোরণ, ছত্রভঙ্গ শিক্ষার্থীরাআমাদের আরও মনে রাখতে হবে, এ হামলাগুলো শুধু ছাত্রলীগ আর তার দোসররাই করেনি, হামলাগুলো করার নির্দেশ এসেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পরিচয়ে থাকা কতিপয় ফ্যাসিবাদী দালালদের মাধ্যমে। অভ্যুত্থানজুড়েই তাদের নানারকম উসকানিমূলক, প্রত্যক্ষ হামলার নির্দেশের মাধ্যমে শিক্ষক হওয়ার যে নৈতিক এবং পেশাগত মর্যাদা তা সম্পূর্ণ হারিয়েছেন তারা। সেসব শিক্ষককেও পূর্ণাঙ্গ বিচারের আওতায় আনা জরুরি।
Advertisement
ঢাবি-জাবিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এসব সন্ত্রাসী শিক্ষার্থী আর ফ্যাসিবাদী শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ বিচারের মুখোমুখি করতে হবে, তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে এবং তাদের সব শিক্ষাজীবনের সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্থায়ী বরখাস্ত এবং গণহত্যার মদতদাতা ও বয়ান বিনির্মাণের জন্য আইনের দণ্ডবিধি অনুযায়ী বিচারিক আদালতের মুখোমুখি করতে হবে।
এছাড়া গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদ হাসিনার ল্যাসপেন্সার হিসেবে কাজ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে র্যাগিং-গণরুম-গেস্টরুমের নির্যাতন-নিপীড়নের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সব শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ তদন্তের ভিত্তিতে বিচারের আওতায় আনতে হবে। দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসের মদদদাতা ও সন্ত্রাসীদের বিচারের আপসহীন মনোভাব পোষণের জন্য আহ্বান জানাই।
এমএএইচ/এএসএম
Advertisement