সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর ওপর নির্মিত দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেল সেতু মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। এজন্য প্রস্তুত করা হয়েছে স্পেশাল ট্রেন। ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে স্টেশনে ৬ কোচের (বগির) এই স্পেশাল ট্রেন প্রস্তুতের পর এখন সজ্জিতকরণের কাজ চলছে।
Advertisement
সরেজমিনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে ওয়াশফিটে দেখা যায়, ট্রেনের ছয়টি কোচ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সিটে নতুন কভার লাগানোসহ যান্ত্রিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। এই ছয় কোচ যমুনা সেতু উদ্বোধনের স্পেশাল ট্রেনে ব্যবহার করা হবে।
সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে ওয়াশফিটে কর্মরত ট্রেন পরীক্ষক নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ট্রেনের ছয়টি বগি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। পাশাপাশি এ ছয় বগিতে যান্ত্রিক কোনো ক্রুটি রয়েছে কি না তা পরীক্ষা চলছে।
তিনি আরও জানান, এ স্পেশাল ট্রেনে দুটি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) সংযুক্ত করা হবে। এই ইঞ্জিনসহ ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার) সহকারী চালকসহ চারজন সিরাজগঞ্জের সয়েদাবাদ স্টেশনে পৌঁছাবে।
Advertisement
ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনের মাস্টার শাহজাহান আলী জাগো নিউজকে জানান, যমুনা সেতু উদ্বোধনের জন্য স্পেশাল ট্রেনের দুটি ইঞ্জিন ও ছয়টি বগি দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে সয়েদাবাদ স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। এখানে ট্রেন সজ্জিতকরণের কাজ করা হবে। এ ট্রেনে আসন সংখ্যা থাকবে ৩৭০টি।
‘সাজ ঘর’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ট্রেন সজ্জিতকরণের কাজ করছে। সাজ ঘরের সত্ত্বাধিকারী মাহমুদুর রহমান জুয়েল জাগো নিউজকে জানান, যমুনা সেতু স্পেশাল উদ্বোধনী ট্রেনের ইঞ্জিন ও বগি সজ্জিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। আজ রাতের মধ্যেই পুরো ট্রেন সজ্জিত করা হবে।
পাকশী বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই) আশিষ কুমার মণ্ডল জাগো নিউজকে জানান, যমুনা সেতু উদ্বোধনী ট্রেনের দুই প্রান্তে দুটি ইঞ্জিন সংযুক্ত থাকবে। প্রয়োজন অনুসারে দিক অনুযায়ী লোকো মাস্টাররা ট্রেন পরিচালনা করবেন। এই ট্রেনে দুজন চালক মনিরুজ্জামান ও শামসুর রহমান, সহকারী চালক ওসমান গণি ও সাঈদ হাসান দায়িত্ব পালন করবেন। ইঞ্জিনসহ বগি এখন সয়েদাবাদ স্টেশনে অবস্থান করছে।
পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন জাগো নিউজকে জানান, যমুনা রেল সেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশনে ১৮ মার্চ ১১টা ২০ মিনিটে এ সেতুর উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। কর্মসূচির মধ্যে যমুনা রেল সেতু পূর্ব ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে সিরাজগঞ্জ পশ্চিম প্রান্তে সয়দাবাদ রেল স্টেশন পর্যন্ত উদ্বোধনী ট্রেনে অতিথি ও সংশ্লিষ্টরা যমুনা রেল সেতু পারাপার হবেন। সেখানে ১১টা ৪০ মিনিটে সয়দাবাদ রেল স্টেশনে সংবাদ সম্মেলন করবেন। পরে দুপুর ১২টায় ইব্রাহিমাবাদ রেল স্টেশন পূর্ব প্রান্তে ফেরত যাবেন।
Advertisement
পাকশী বিভাগীয় সেতু প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে জানান, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলকে ঢাকার সঙ্গে রেলপথের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে যুমনা নদীর ওপর ৪.৮ কিলোমিটার ডাবল লাইন ডুয়েলগেজ সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এ সেতু ৫০টি পিলার আর ৪৯টি স্প্যানের ওপর অত্যাধুনিক স্টিল প্রযুক্তিতে নির্মিত হয়েছে। এর স্থায়িত্ব শত বছর। সেতুতে এমন এক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে পরবর্তীতে এর রং করার প্রয়োজন হবে না।
শেখ মহসীন/জেডএইচ/এমএস