দেশজুড়ে

মিস্ত্রি সেজে বাড়িতে কাজ নিয়ে স্বর্ণালংকার-টাকা লুট

মাদারীপুরে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে পরিবারের সবাইকে অচেতন করে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের ঘটনা ঘটেছে।

Advertisement

রোববার (১৬ মার্চ) ভোররাতে সদর উপজেলার ছিলারচর ইউনিয়নের পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এসময় দুজনকে গণপিটুনি দিয়েছে গ্রামবাসী। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে।

আটকরা হলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার আমিন খাঁ (২৮) ও দিঘলিয়া এলাকার রুবেল মিয়া (৩৮)।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে পশ্চিম রঘুরামপুর গ্রামের গোলাম রহমান ফকিরের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজে যান কয়েকজন শ্রমিক। ধারণা করা হয়, ওই শ্রমিকরা শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ইফতারির সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন। সেই খাবার খেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন বাড়ির লোকজন।

Advertisement

এই সুযোগে রোববার ভোররাতে ঘর থেকে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যান শ্রমিকরা। সেহরি শেষে নামাজ পড়তে বের হন প্রতিবেশীরা। এসময় গোলাম রহমান ফকিরের ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে তাদের সন্দেহ হয়। তখন ভেতরে ঢুকে বাড়ির সদস্যদের অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা।

এসময় রাজমিস্ত্রিদের কেউ ছিলেন না। তাই প্রতিবেশীরা শ্রমিকদের খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে পাশের হাজমকান্দি গ্রাম থেকে ইজিবাইকে করে পালিয়ে যাওয়ার সময় শ্রমিকদের আটকান তারা। পরে তাদের গণপিটুনি দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আমিন খাঁ ও রুবেল মিয়াকে আটক করে।

পরে তাদের চিকিৎসার জন্য মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় আটকদের কাছ থেকে পুলিশ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গোলাম রহমান ফকির ও তার স্ত্রীকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

ভুক্তভোগীর মেয়ে তানিয়া আফরোজ বলেন, ওরা শ্রমিক সেজে আমাদের বাসায় কাজ নেন। আসলে তারা মুখোশধারী ডাকাত। তারা নানা কৌশলে ডাকাতি করে। তাই এদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবি জানাই।

প্রতিবেশী মো. হোসেন বলেন, আমরা নামাজ পড়তে বের হলে দেখি ঘরের দরজা খোলা। এতে সন্দেহ হয়। এরপর মোটরসাইকেল নিয়ে শ্রমিকদের খুঁজতে থাকি। দেখি তারা একটি অটোবাইকে করে পালিয়ে যাচ্ছেন। তখন তাদের আটক করে গণধোলাই দেওয়া হয়।

মাদারীপুর ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রিয়াদ মাহমুদ বলেন, গণপিটুনিতে আহত দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া অচেতন অবস্থায় আরও দুজনকে ভর্তি করা হয়। তাদের জ্ঞান ফিরেছে।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, লুট হওয়া টাকা ও স্বর্ণালংকার পুলিশের হেফাজতে আছে। আটক দুজন পুলিশের হেফাজতে হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনাস্থল থেকে ইরান নামে আরও একজন পালিয়ে যান। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আয়শা সিদ্দিকা আকাশী/জেডএইচ/জিকেএস