নারায়ণগঞ্জ শহরের জামতলা এলাকার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ প্রাঙ্গণ। ইফতারের সময় হতেই প্রতিদিন যেখানে দেখা যায় পথচারী, রিকশাচালক, দিনমজুর, ভিক্ষুক ও অসহায় মানুষের জমায়েত। সবার জন্য করা হয় বিনামূল্যে ইফতারের ব্যবস্থা। প্রথম রমজান থেকে প্রতিদিন চলছে এ কার্যক্রম।
Advertisement
‘মুক্ততরী’ নামে একটি সামাজিক সংগঠনের একদল তরুণ-তরুণীর উদ্যোগে এবছর চতুর্থবারের মতো এ আয়োজন। প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ জন মানুষ ইফতার করছেন বলে জানান আয়োজকরা। বিনামূল্যে এ ইফতারের আয়োজন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন নিয়মিত ইফতারে অংশ নেওয়া নিম্ন আয়ের মানুষ।
ফাতেমা নামে এক পথচারী বলেন, আমি বিভিন্ন বাসায় কাজ করি। যে কারণে সময়মতো নিজ বাসায় যেতে পারি না। তাই প্রতিদিনই এখানে এসে ইফতার করি। তারা (আয়োজকরা) ভালো খাবার দেন। ব্যবহারও ভালো।
মুক্ততরীর সদস্য পুস্পিতা সাহা বলেন, ২০১৯ সাল থেকে মুক্ততরী কাজ শুরু করে। সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। এর ধারাবাহিকতায় ২০২২ সাল থেকে মুক্ত ইফতারের আয়োজন করে আসছি। প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন মানুষের জন্য ইফতারের আয়োজন করা হয়। মাঝে মধ্যে ১২০ থেকে ১৫০ জন ইফতারে যুক্ত হচ্ছেন। অনেক সময় কাজের জন্য যারা সময়মতো গন্তব্যে যেতে পারেন না তারা আমাদের ইফতারে যুক্ত হন।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ভালোলাগা থেকে এই কাজ করা। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে এই কাজ করছি। এখানে যারা কাজ করে তারা শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত। তারা নিজেদের কাজের পাশাপাশি এখানে এসে সময় দেন।
মুক্ততরীর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রুবায়েত হাসান সায়মন বলেন, বিগত তিন বছর রমজানের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত ইফতার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এবারসহ চার বছর হবে। স্বেচ্ছাসেবকরা বাসায় ইফতার না করে ছিন্নমূল মানুষজনসহ রাস্তায় ইফতার করেন। যে কেউ এসে আমাদের ইফতারে যোগ দিতে পারেন।
অর্থের উৎস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের অর্থায়নের পাশাপাশি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় এই আয়োজন হয়। অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থী। পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের পরিবারের সদস্যরাও আমাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করেন। ইফতার ছাড়াও আমরা বিভিন্ন সময় সামাজিক কার্যক্রম করি।
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ ধরনের মানবিক কাজের মাধ্যমে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তারাই মূলত প্রকৃত উন্নয়নের অংশীদার। সব বিত্তবান মানুষের উচিত এ ধরনের কাজে অংশগ্রহণ করা।
Advertisement
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এমএন/জেআইএম