খেলাধুলা

হৃদয়-মিরাজের উজ্জ্বল পারফরম্যান্সে আরও ওপরে মোহামেডান

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বের মাঝামাঝি এসে প্রথম বড় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মোহামেডান। শঙ্কা উড়িয়ে এ ম্যাচে বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো তামিম ইকবালের দল। আজ শনিবার শেরে বাংলায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৯৪ রানে হারিয়েছে মোহামেডান।

Advertisement

ধানমন্ডি ক্লাবের কাছে অপ্রত্যাশিত হেরে লিগ শুরু করা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ টানা ৩ জয়ের পর হেরেছে দ্বিতীয়বারের মতো। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচে গুলশান ক্লাবের কাছে হেরে লিগ শুরু করা মোহামেডান টানা চতুর্থ ম্যাচ জিতে লিগ টেবিলে নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে।

৯৪ রানের জয় দেখে ভাবার কোনো কারণ নেই যে, মোহামেডান রান পাহাড় গড়েছে। তাওহিদ হৃদয় (৭৬ বলে ৬৬) ও মাহিদুল ইসলাম অংকনের (৬৭ বলে ৪২) হাত ধরে মোহামেডানর কোনো রকমে আড়াইশর ঘরে পা রাখতে পেরেছিল মাত্র (৯ উইকেটে ২৫৩)। ২৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট হয়ে যায় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

এর আগে মনে হচ্ছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের পেসার শরিফুল ইসলাম ও তানজিম সাকিব শেরে বাংলার কন্ডিশনে খানিক সহায়তা পাবেন। কিন্তু তা পাননি। বরং মোহামেডানের দুই ওপেনার রনি তালুকদার ( ৩৯ বলে ৩৮) ও অধিনায়ক তামিম (২৫ বলে ২৮) বেশ হাত খুলে মোহামেডানকে শুভসূচনা এনে দেন।

Advertisement

ইনিংসের মাঝপথে স্লো হয়ে যায় মোহামেডানের রান চাকা। পরে হৃদয় ও মাহিদুল অংকন রান চাকা সচল করেন। তাদের হাত ধরেই ২৫৩ রান করে মোহামেডান। বোলাররা সেই পুঁজিকেই জয়ের জন্য যথেষ্ঠ বলে প্রমাণ করেন। এবারের লিগে আজই প্রধান স্ট্রাইকবোলার তাসকিন আহমেদের সার্ভিস পেয়েছে মোহামেডান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্টের পরামর্শেই দুই সপ্তাহ বিশ্রামে ছিলেন তিনি।

বল হাতে নেমেই জ্বলে ওঠেন তাসকিন। ৩৩ রানে ৩ উইকেট দখল করা তাসকিনের প্রথম শিকার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের টপঅর্ডার সৌম্য সরকার। উইকেটের পিছনে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভস বন্দী হন সৌম্য। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের হয়ে সবচেয়ে ভালো খেলা অলরাউন্ডার শেখ মেহেদীর ৪৩ রানের (৪৯ বলে ৭ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কা)। ওই ইনিংসের ইতিও ঘটে তাসকিনের বলেই।

তবে তাসকিনের চেয়েও বেশি বোলিং কারিশমা দেখান মেহেদী হাসান মিরাজ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর মিরাজও পুরো ছন্দে ও গতিতে লিগ খেলছেন না। আগের ৪ ম্যাচের দুটিতে খেলে ঝুলিতে পুরেছিলেন দুটি করে ৪ উইকেট। আজকে সুদে-আসলে পুষিয়ে দিয়েছেন এ ডানহাতি অফস্পিনার। দখল করেন ৩৮ রানে ৪ উইকেট। তাসকিনের পর নতুন বল হাতে নিয়েই আঘাত হানেন মিরাজ। ফেরান রূপগঞ্জের প্রধান ওপেনার তানজিদ তামিমকে (১১)। মিরাজ ও তাসকিনের ধারালো বোলিংয়ে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট হয় আকবর আলীর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

এক সময় মনে হচ্ছিল, রূপগঞ্জের স্কোর ১০০ পার হবে না। ৫৭ রানেই পতন হয় ৬ উইকেটের। সাজঘরে ফেরত যান তানজিদ তামিম (১১), সাইফ হাসান (১১), সৌম্য সরকার (০), আফিফ হোসেন ধ্রুব (১৪), চৌধুরী রিজওয়ান (১১) ও অধিনায়ক আকবর আলী (২)।

Advertisement

চরম বিপর্যয়ে জাকের আলী অনিক আর শেখ মেহেদী সপ্তম উইকেটে ম্যাচ ধরার চেষ্টা করেন। দলকে বেশিদূর এগিয়ে দিতে না পারলেও দুজনই কিছু দৃষ্টিনন্দন শট খেলে স্কোরকার্ডে যোগ করেন ৪৮ রান। জাকের আলী ৪৬ বলে ২ ছক্কা ও এক বাউন্ডারিতে ২৫ রানে ফেরার পর শেখ মেহেদীর ৪৯ বলে ৭ বাউন্ডারি ও এক ছক্কার ৪৩ রানের ইনিংস শেষ হয়। সংক্ষিপ্ত স্কোর

মোহামেডান: ৫০ ওভারে ২৫৩/৯ (তামিম ইকবাল ২৮, রনি তালুকদার ৩৬, মাহিদুল অংকন ৪২ তাওহিদ হৃদয় ৬৬, আরিফুল ইসলাম ১৫, মেহেদী মিরাজ ২৫, সাইফউদ্দীন ১৯*; শরিফুল ইসলাম ৪/৫৪, তানজিম সাকিব ২/৭০, শেখ মেহেদী ১/৪০, চৌধুরী রিজওয়ান ১/১৬, সৌম্য সরকার ১/২৭)।

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ৩৭.৪ ওভারে ১৫৯ (তানজিদ তামিম ১১, সাইফ হাসান ১১, চৌধুরী রেজওয়ান ১১, আফিফ হোসেন ১৪, জাকের আলী অনিক ২৫, শেখ মেহেদী ৪৩, তানজিম সাকিব ১১ শরিফুল ইসলাম ১৪; তাসকিন ৩/৩৩, মিরাজ ৪/৩৮, সাইফউদ্দীন ২/১৫, তাইজুল ইসলাম ১/৪০)।

ফল: মোহামেডান ৯৪ রানে জয়ী।

এআরবি/এমএইচ/এএসএম