আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের অস্থিতিশীল নীতির প্রভাব ডলার ও শেয়ারবাজারে

মার্কিন মিত্র ও প্রতিবেশীদের প্রতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইনের ক্ষেত্রে আবেদনময়ী হতে পারে। তবে বিনিয়োগকারীরা ভিন্ন কিছু মনে করছেন। এরই মধ্যে আমেরিকান অর্থনীতির সম্ভাবনার ওপর আস্থা কমেছে এবং আর্থিক বাজারগুলোতে নিয়মিত পতন হচ্ছে।

Advertisement

ফেব্রুয়ারিতে শীর্ষে পৌঁছানোর পর থেকে মার্কিন স্টকে এসঅ্যান্ডপি এর সূচক নয় শতাংশ কমেছে। কারণ ট্রাম্পের সুরক্ষাবাদ যুক্তিকে অযৌক্তিক মনে করা হচ্ছে। তাছাড়া অর্থনৈতিক ইস্যুতে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আস্থা কমে যাচ্ছে।

ডলারের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। ট্রাম্প একের পর এক শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পর থেকে ডলারের দাম কমেছে। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে অন্যান্য মুদ্রার তুলনায় প্রায় ছয় শতাংশ কমেছে মার্কিন মুদ্রার মূল্য। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো ইউরোর বিপরীতে ডলারের পতন।

বিভ্রান্তির একটি বিষয় হলো ট্রাম্পের দল জানিয়েছে তারা ভিন্ন জিনিস চায়। ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলছেন, প্রশাসন সাম্প্রতিক আমেরিকান নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি শক্তিশালী ডলার চায়। ট্রাম্প এবং ভাইস-প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্স উভয়ই বিশ্বাস করেন যে ডলারের শক্তি আমেরিকান শিল্পকে পিছিয়ে দিচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্ক নীতির মতোই বিভ্রান্তির আরেকটি উৎস হলো দুর্বল মুদ্রা থাকার সুবিধা ও খরচ সম্পর্কে প্রশাসনের ভুল বোঝাবুঝি। দুর্বল ডলারের সমর্থকরা বলছেন যে এটি রপ্তানিকে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলতে সাহায্য করবে। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে উৎপাদন ক্ষেত্রে বৈশ্বিক ভ্যালু চেইনের প্রবৃদ্ধি বিদেশে পণ্য বিক্রির ওপর বিনিময় হারের প্রভাবকে কমিয়ে দিয়েছে। কারণ রপ্তানিকারকরা এখন আগের তুলনায় বেশি আমদানিকৃত উপাদান ব্যবহার করে।

Advertisement

তাছাড়া মুদ্রা দুর্বলতার প্রভাব সবচেয়ে বেশি হয়। যদি উৎপাদনে কর্মরত এক কোটি ৩০ লাখ আমেরিকান উপকৃত হয়, তবে তা প্রায় ৩০ কোটি ভোক্তার বিপরীতে যায়। তাদের ওপর চাপ বাড়ে মূল্যস্ফীতির। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে হাউজহোল্ড মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে।

ইউরোপীয় ব্যয়ের কারণে মার্কিন মুদ্রাটি ইউরোর বিপরীতে বিশেষভাবে পতনের সম্মুখীন হতে পারে। অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের দুর্বলতা মূলত আত্মক্ষতির দিককেই ইঙ্গিত করে। শুল্কের ফলে মার্কিন অর্থনীতিতে যে আঘাত এসেছে তা সরাসরি প্রভাবের চেয়েও বেশি।

এদিকে পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হবে। বুধবার (১২ মার্চ) ইউরোপীয় ইউনিয়নের কমিশন এ তথ্য জানিয়েছে। এতে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সব ধরনের ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ বর্ধিত শুল্ক বুধবার থেকে কার্যকর হয়েছে।

Advertisement

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার (২২.০৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) মূল্যের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেবে কানাডা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এক কানাডীয় কর্মকর্তা।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট

এমএসএম