আইন-আদালত

ধর্ষণ মামলা থেকে খালাস পেলেন সাবেক উপসচিব রেজাউল করিম

কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় সাবেক উপ-সচিব এ কে এম রেজাউল করিম রতনকে (৬০) বেকসুর খালাস দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

Advertisement

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সি মো. মশিয়ার রহমান এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের এক ছাত্রীকে প্রায় এক বছর ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগে ২০১৮ সালে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তখন তিনি উপ-সচিব পদমর্যাদায় জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক পদে দায়িত্বরত ছিলেন। মামলাটির তদন্ত শেষে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলে ২০১৯ সালের ২৫ জুন রতনকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সে বছরের ১২ অক্টোবর তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষে বিভাগীয় মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ২১ নভেম্বর চাকরি থেকে এ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় সরকার।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা থাকাকালে রেজাউল করিম রতন ২০১৬ সালে মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ওই সময় কলেজে পড়ুয়া ভুক্তভোগী ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন তিনি। এরপর বিয়ের আশ্বাসে তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে ঘোরাঘুরি করেন। একপর্যায়ে ২০১৭ সালের ১২ জুন আসামি রেজাউল করিম তার অফিসে ডেকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভুক্তভোগীকে পান করান এবং ঘুমন্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেন। পরে এই ঘটনার ভিডিও আছে বলে ভয় দেখিয়ে এক বছর ধরে ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করে চলেন আসামি রেজাউল।

Advertisement

এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই ধানমন্ডি থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৩ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কুইন আক্তার। একই বছরের ২৫ জুন মামলার অভিযোগ গঠন করে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেন ঢাকার নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক সহিদুল ইসলাম। মামলার বিচার চলাকালে আদালত সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এরশাদ আলম জর্জ বলেন, এ মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

তিনি আরও বলেন, এ মামলার আসামি রেজাউল করিম রতন একজন আওয়ামী দোসর। তার পক্ষে আইনি লড়াই করেন সাবেক প্রয়াত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী নাসরীন সিদ্দীকা লিনা। রেজাউল করিম তার বন্ধু ও আওয়ামী লীগ নেতা আমিনুল ইসলাম আমিনের রাজনৈতিক অফিসে নিয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ধর্ষণ করতেন। তবে আসামি রেজাউল করিম জামিনে মুক্তিলাভ করে রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সাক্ষীদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। আশা করি উচ্চ আদালতে আমরা ন্যায়বিচার পাবো।

এমআইএন/এমএইচআর/জেআইএম

Advertisement