ইসলামী ব্যাংকে এস আলম (সাইফুল আলম) সংশ্লিষ্ট ২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ও ব্যক্তিবিশেষের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ (অবরুদ্ধ) রাখতে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডার এই পরিচালকদের আদালতের অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
Advertisement
এস আলম সংশ্লিষ্ট হিসেবে পরিচিত ২৪ শেয়ারহোল্ডার কোম্পানি বা প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর ব্যাংকটিতে শেয়ারের পরিমাণ ৮১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এম মনজুর আলম।
ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রিট করেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণ না করে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসিতে ওই কোম্পানিগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণের বৈধতা নিয়ে এ রিট করা হয়।
Advertisement
আদেশের বিষয়ে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, এস আলম (সাইফুল আলম) সংশ্লিষ্ট ২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ব্যাংকের এজিএমে অংশ নিলে ভোটাধিকারের মাধ্যমে তাদের মতো করে এজেন্ডা পাস করে নেবেন। কারণ, সংখ্যাগরিষ্ঠ শেয়ারহোল্ডার পরিচালক তারা। অথচ আইন অনুসারে ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার একই গ্রুপভুক্ত বা পারিবারিকভাবে রাখা যায় না। কিন্তু একই পরিবারের মদতপুষ্ট প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সূত্রে ২৪ কোম্পানি প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার হিসেবে ব্যাংকটিতে যুক্ত হয়। তাদের শেয়ার ৮১ দশমিক ৯২ শতাংশ। যে কারণে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিট করেন।
আরও পড়ুনবেক্সিমকোর আরও ১১২৯৩ শ্রমিকের পাওনা পরিশোধরমজানে রোজাদারদের তৃষ্ণা মিটাচ্ছে সেরা ওয়াটার ট্যাঙ্ক২৪ প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারহোল্ডার পরিচালক ব্যাংকের এজিএম ও ইজিএমেও অংশগ্রহণ করতে পারবেন না জানিয়ে আইনজীবী মো. রুকুনুজ্জামান বলেন, রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই শেয়ারগুলো অ্যাটাচ (জব্দ) থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। অর্থাৎ শেয়ারগুলো হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই শেয়ারগুলোর বিপরীতে বোনাস লভ্যাংশ প্রদানও স্থগিত থাকবে।
ইসলামী ব্যাংকের এমডির এই আইনজীবী আরও জানান, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুসরণ না করে কোন ক্ষমতাবলে ২৪ কোম্পানি প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ার ধারণ করেছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। এ ধরনের শেয়ারগুলো কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, অর্থসচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) রুলের জবাব দিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, প্রাতিষ্ঠানিক শেয়ারধারীদের বড় অংশই এস আলম সংশ্লিষ্ট। এর বাইরে বিদেশি শেয়ারধারীদের মধ্যেও এস আলম সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা রয়েছেন। সব মিলিয়ে এস আলমের হাতেই ব্যাংকটির ৮২ শতাংশ শেয়ার।
Advertisement
রিট আবেদন থেকে জানা যায়, যেসব প্রতিষ্ঠানের নামে এসব শেয়ার রয়েছে সেগুলো হলো- জেএমসি বিল্ডার্স, বিটিএ ফাইন্যান্স, প্যারাডাইস ইন্টারন্যাশনাল, এবিসি ভেঞ্চারস, এক্সেল ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, প্লাটিনাম এনডেভার্স, এক্সেলশিয়র ইমপেক্স কোম্পানি, গ্র্যান্ড বিজনেস, লায়ন হেড বিজনেস রিসোর্সেস, বিএলইউ ইন্টারন্যাশনাল, আরমাডা স্পিনিং মিলস, কিংসওয়ে এনডেভার্স, ইউনিগ্লোভ বিজনেস রিসোর্সেস, সলিড ইনস্যুরেন্স পিসিসি, হলিস্টিক ইন্টারন্যাশনাল, হাই ক্লাস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ক্যারোলিনা বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, ব্রিলিয়ান্ট বিজনেস কোম্পানি, ব্রডওয়ে ইম্পেক্স কোম্পানি, পিকস বিজনেস এন্টারপ্রাইজ, এভারগ্রিন শিপিং, ম্যারাথন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল, কিংস্টোন ফ্লাওয়ার মিলস ও পারসেপ্টা এনডেভার্স।
এফএইচ/কেএসআর/জেআইএম