নিয়ামুর রশিদ শিহাব
Advertisement
গ্রাম কিংবা শহরে ঘরে ঘরে সারাবছরই মুড়ির কদর থাকে। আর রমজান মাস এলে মুড়ির চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। ইফতারে ছোলা, মুড়ি বা পেঁয়াজু না হলে জমেই না। তাছাড়া লবণ-পানি আর রসুন দিয়ে হাতে ভাজা মুড়ির স্বাদই অন্যরকম। কিন্তু মেশিনে তৈরি মুড়ির দাপটে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে হাতে ভাজা মুড়ি। আধুনিক জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী হাতে ভাজা মুড়ি।
জানা যায়, ১৫০ থেকে ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার শাহা বাড়ির প্রায় সবাই মুড়ি হাতে ভাজার কাজ করতেন। কিন্তু এখন মাত্র ২-৪টি পরিবার মুড়ি ভাজার কাজ করে। বাকি পরিবারগুলো মেশিনের মুড়ির দাপটে প্রতিযোগিতার বাজারে টিকতে না পেরে পেশা বদলে নিয়েছেন। জীবিকার তাগিদে কেউ দিনমজুর, চটপটি, কেউ কৃষিকাজসহ বিভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন দ্রুত সফলতার কোনো শর্টকাট নেই: সিহাব সাদমান প্রথমবার পরীক্ষা দিয়েই বিজেএস জয়ওই এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ছোটবেলা থেকেই তারা বাপ-দাদার সঙ্গে হাতে ভাজা মুড়ি তৈরি করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করতেন। সে সময় এ মুড়ির চাহিদা ছিল অনেক। রাত-দিন ভেজেও চাহিদা শেষ করতে পারতেন না। কিন্তু বাজারে মেশিনে মুড়ি আসার পর থেকে আস্তে আস্তে হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা কমতে শুরু করেছে। আর এখন নেই বললেই চলে। বাধ্য হয়ে তাদের গ্রামের প্রায় সবাই মুড়ি ভাজা বাদ দিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন।
Advertisement
গলাচিপা মহিলা ডিগ্রি কলেজের জেষ্ঠ্য প্রভাষক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ বলেন, ‘হাতে ভাজা মুড়ি শুধু খাবার নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতির অংশ। সঠিক বাজার ব্যবস্থা ও সরকারি সহায়তার অভাবে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। সরকার যদি এ শিল্প বাঁচাতে এগিয়ে আসে, তাহলে মুড়ি শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরদের জীবিকা রক্ষা পাবে। এ জন্য প্রয়োজন মুড়ি বিক্রির নিশ্চয়তা।’
এসইউ/জিকেএস