ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ের কাজ চলাকালে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি করে ভাইরাল হওয়া যুবদল নেতা আবদুর রহিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
Advertisement
গ্রেফতার আবদুর রহিম মৌকরা ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তিনি নাঙ্গলকোট উপজেলার সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি নেতা আবদুল গফুর ভূঁইয়ার অনুসারী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ের ব্রিজ নির্মাণ কাজের ঠিকাদার একরাম হোসেনের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন যুবদল নেতা আবদুর রহিম। একপর্যায়ে মঙ্গলবার তার লোকজনকে মারধরও করেন তিনি। এ ঘটনার একটি ভিডিও বুধবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুর রহিম রাতে গোমকোট বাজারের ব্যবসায়ী মো. জসিম উদ্দিনকে মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।
Advertisement
এ ঘটনায় রাতেই আহত জসিম উদ্দিন যুবদল নেতা আবদুর রহিম ও তার ৬ সহযোগীকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে গভীর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আবদুর রহিমকে গ্রেফতার করে।
এই যুবদল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি এলাকায় বেপরোয়া হয়ে সংখ্যালঘু পরিবারসহ বিভিন্ন মানুষ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছেন।
আবদুর রহিমের হামলায় আহত জসিম উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, কে বা কারা তার চাঁদাবাজির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করেছে। কিন্তু সন্দেহজনকভাবে তারা আমাকে মারধর করে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় হিন্দু মেয়েদের বিয়ের অনুষ্ঠান করতে হলে তাকে চাঁদা দিতে হয়। গত ৬-৭ দিন আগেও সুভাস নামে এক হিন্দু পরিবারের কাছে থেকে ৫০০০ হাজার টাকা চাঁদা নিয়েছেন তিনি।
Advertisement
এদিকে এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার একরাম হোসেনের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে সাবেক সংসদ সদস্য (কুমিল্লা-১০) ও বিএনপি নেতা আব্দুল গফুর ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, আবদুর রহিম আমার অনুসারী ছিলেন সত্য। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি বেপরোয়া। এটি জানার পর আমার সব নেতাকর্মীকে বলে দিয়েছি তার সঙ্গে যেন রাজনৈতিক সম্পর্ক না রাখেন। তার অপকর্মের দায় আমি নেবো না।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক জাগো নিউজকে বলেন, আবদুর রহিমের বিষয়টি জানার পর রাতেই তাকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত এই নেতার অপকর্মের দায়-দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আবদুর রহিমের সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখারও অনুরোধ করা হয়েছে।
জাহিদ পাটোয়ারী/জেডএইচ/জিকেএস