দেশজুড়ে

লাল শিমুলে চোখ জুড়াচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের

প্রকৃতি আজ দক্ষিণা দুয়ার খুলে দিয়েছে, আর সে দুয়ারে বইছে ফাল্গুনের হাওয়া। বসন্তের আগমনে কোকিল গাইছে গান। ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা।

Advertisement

ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম মাস ফাল্গুনেই আগুন রাঙা নানা ফুলের সমারোহে নান্দনিক হয়ে ওঠে প্রকৃতি। লাল শিমুল সেই আগুন রাঙা ফুলেদের অন্যতম একটি। এসময় গাছের ডালে ডালে ফোটে লাল শিমুল ফুল।

গোপালগঞ্জ শহরতলির চর মানিকদাহ গ্রামে এখন সে আগুন ছড়াচ্ছে বেশ কিছু শিমুল ফুলের গাছ। প্রতিটি ডালে উঁকি মারছে শিমুল। ফুলে ফুলে আনন্দে মাতোয়ারা মৌমাছি থেকে শুরু করে দেশীয় নানান পাখ-পাখালি। সহজেই যে কোনো মানুষের দৃষ্টি কাড়ছে এই রক্তিম শিমুল ফুল। বসন্তের এ রঙিন ক্যানভাসে আকুল হচ্ছেন প্রকৃতিপ্রেমীরা।

নয়নাভিরাম এ সৌন্দর্য উপভোগে ছুটছেন তারা। শিমুল ফুলের মিষ্টি সুবাস নেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই ক্যামেরাবন্দি হচ্ছেন ফুলসমেত। শহরের মাঝেই এমন শিমুল ফুল দেখতে পেয়ে খুশি দর্শনার্থীরা।

Advertisement

তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও উন্নয়নের ধারায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ গাছটি হারিয়ে যেতে বসেছে। গ্রামবাংলার পথে প্রান্তরে এখন আর এ ফুলের গাছটি তেমন একটা চোখে পড়ে না। তাই রয়ে যাওয়া গাছগুলোর যত্নের পাশাপাশি সবাইকে শিমুল ফুলের গাছ লাগানোর আহ্বান জানান প্রকৃতিপ্রেমীরা।

মানিকদাহে শিমুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছিলেন টিপু বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, গোপালগঞ্জে শিমুল ফুল তেমন একটা দেখা যায় না। ঋতুরাজ বসন্তে শিমুলের এমন সমারোহ আমাদের জন্য অন্যরকম এক পাওয়া। কারণ, ফুল দেখলে কার না ভালো লাগে, মনটা ভালো হয়ে যায়। তাই আমরা তিন বন্ধু মিলে শিমুল ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি।

আরেক প্রকৃতিপ্রেমি সোহানা ইসলাম বলেন, আমরা বান্ধবীরা মিলে শিমুল ফুল দেখতে ও ঘুরতে এসেছি। কবিতার ভাষায় বলতে না পারলেও নিজের ভাষায় বলছি, শিমুলের সৌন্দর্যের তুলনা শুধু শিমুল ফুল দিয়েই চলে। দেখে মনটা শান্ত হয়ে গেছে। শিমুল ফুল শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, এটি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বেড়াতে আসা ইফশিয়া রাত্রি বলেন, মানিকদাহ গ্রামে শিমুল ফুলের গাছ রয়েছে শুনে ঘুরতে এসেছি। শিমুলের প্রতিটি শাখা ফুলে ফুলে ভরা। এমন দৃশ্য দেখে মনটা ভালো হয়ে গেলো। সবার কাছে অনুরোধ থাকবে সৌন্দর্য ধরে রাখতে সবাই যেন একটি করে হলেও শিমুল ফুলের গাছ লাগায়।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা পবিত্র হীরা বলেন, মানিকদাহ গ্রামের একটি এলাকার নাম সাধুর মোড়। এই মোড়েই একটি শিমুল গাছের নিচে আমার দোকান। প্রতিদিনই বিভিন্ন বয়সের প্রকৃতিপ্রেমীরা শিমুল ফুল দেখতে আসেন। অনেকই স্মৃতি হিসেবে ক্যামেরায় ছবি তুলে রাখেন। এতে আমার দোকানে বেচাকেনাও ভালো হয়।

শুধু চর মানিকদাহ নয়, শিমুল ফুলের দেখা মিলছে এ জেলার আরও অনেক গ্রামে। বিশেষ করে গোপালগঞ্জ-টুঙ্গিপাড়া মহাসড়কের দুপাশে চোখে পড়বে এমন অনেক শিমুল গাছ, যা এই পথে চলাচল করা মানুষের চোখ শীতল করছে।

জেডএইচ/জেআইএম