যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার (৪ মার্চ) চীনা পণ্যের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই সিদ্ধান্ত দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধকে আরও তীব্র করে তুলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
Advertisement
এই নতুন শুল্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা চীনা পণ্যগুলোর ওপর মোট শুল্কের হার ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে, যা আগের ১০ শতাংশ শুল্ক এবং অন্যান্য বিদ্যমান শুল্কের সঙ্গে যোগ হবে।
আরও পড়ুন>>
ট্রাম্পের বাণিজ্যযুদ্ধ মোকাবিলায় প্রস্তুত চীন চীনের পাল্টা শুল্কে কমতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের তেল রপ্তানি যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধে বাংলাদেশের কোনো লাভ হবে?চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কড়া বিরোধিতা করছে এবং নিজেদের স্বার্থ রক্ষার জন্য পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মতভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে এবং সমানতালে সংলাপের মাধ্যমে পারস্পরিক মতপার্থক্য দূর করার সঠিক পথে ফিরে আসবে।
Advertisement
প্রথম ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৮ ও ২০১৯ সালে চীনের প্রায় ৩৮০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ করেছিল। ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কঠোর বাণিজ্য নীতি অনুসরণ করছেন।
তার ঘোষণা অনুসারে, আগামী ১২ মার্চ থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। এছাড়া তিনি স্বয়ংচালিত, আধুনিক প্রযুক্তি এবং ওষুধ শিল্পেও শুল্ক আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্বেগচীনে ব্যবসা পরিচালনাকারী ২৭০টি মার্কিন কোম্পানির সংগঠন যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য পরিষদ (ইউএসসিবিসি) এই নতুন শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করেছে। ইউএসসিবিসি প্রেসিডেন্ট শন স্টেইন বলেছেন, ব্যাপক শুল্ক আরোপ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসা, ভোক্তা এবং কৃষকদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সক্ষমতাকে দুর্বল করবে।
প্রখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, শুল্ক মূলত যুদ্ধের একটি রূপ। এতে শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ওপরই চাপ পড়ে, কারণ এই ব্যয়ের জন্য ‘টুথ ফেয়ারি’ টাকা দেবে না!
Advertisement
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের কৌশল যদি হয় ‘বৃদ্ধি করে কমানো’, তাহলে মাত্র ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ চীনের ওপর পর্যাপ্ত চাপ সৃষ্টি করবে না।
ব্যাংক অব আমেরিকার বিশ্লেষক হেলেন কিয়াও এবং বেনসন উ এক গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, চীনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হলে আরও উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ এবং প্রযুক্তি ও বিনিয়োগের ওপর বিধিনিষেধ দেওয়া অপরিহার্য।
কেএএ/