জাতীয়

বাহারি ইফতারিতে অভিজাত বেইলি রোড

রমজানে সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারে বাহারি পদের ইফতারির আয়োজন করেন অনেকেই। তবে বাসাবাড়িতে হরেক রকমের ইফতারির আয়োজন সম্ভব হয় না। তাছাড়া স্বাদের ভিন্নতাও আনতে চান সবাই। ফলে নগরের বিভিন্ন সড়কের মোড়ে, ফুটপাতে এবং রেস্তোঁরায় ভিড় করেন ভোজনরসিকরা।

Advertisement

রাজধানীর ভোজনরসিকদের একটা অংশ রমজানে ভিড় করেন বেইলি রোডের রেস্তোঁরাগুলোতে। ঘরে নানান আয়োজন থাকলেও এখানকার খাবারের আকর্ষণ যেন পিছু ছাড়ে না অনেকের। আর তাইতো দুপুরের পর থেকেই ক্রেতার আগমনে জমজমটা থাকে বেইলি রোডের রেস্তোঁরাগুলো।

বেইলি রোডের অধিবকাংশ ক্রেতাই অভিজাত। ফলে এখানকার ইফতারির আয়োজনেও থাকে ভিন্নতা। যদিও এ বছর ক্রেতা কিছুটা কম বলে দাবি রেস্তোরাঁ ও দোকান মালিকদের। তবে ক্রেতা যেমনই থাক অন্য বছরের মতো এবারও বাহারি সব ইফতারির আয়োজন রেখেছেন দোকানিরা।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বেইলি রোড ঘুরে জানা যায়, এবার বেইলি রোডে চাহিদার শীর্ষে রয়েছে হালিম। এছাড়া চাহিদা বেড়েছে মাটন চাপ, বিফ চাপ, বিফ কালাভুনা, বিফ কিমা, বিফ কলিজা, ব্রেন মাসালা, চিকেন ঝাল ফ্রাই এসব আইটেমের। বিক্রি তুলনামূলক বেড়েছে চিকেন কোপ্তা, চিকেন হানি গ্লোসিং, চিলি চিকেন ও চিকেন ড্রামস্টিকের।

Advertisement

কথা হয় ইস্কাটনের বাসিন্দা কামাল মাহমুদের সঙ্গে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, রমজানে সাধারণত এখান (বেইলি রোড) থেকেই ইফতারি নেওয়া হয়। এবারও নিচ্ছি। এখানকার নানান পদের মাংসের রেসিপি বেশ মজাদার। বিশেষ করে হালিম ও কালাভুনার জুড়ি মেলা ভার।

আরেক ক্রেতা মাহবুবা জাগো নিউজকে বলেন, রমজানের প্রথম থেকেই বেইলি রোডে ক্রেতার আগমন ভালো থাকে। তবে এবার প্রথম দিকে ক্রেতা কম মনে হচ্ছে। হয়তো অনেকেই পুরান ঢাকা থেকে ইফতারি আনছেন। কয়েক দিন পর ঢাকায় যানজটেআরও বাড়বে, তখন আবার অনেকেই বেইলি রোডমুখী হবেন।

দামের বিষয়ে তিনি বলেন, আগের মতোই দাম মনে হয়েছে, খুব বাড়েনি। তবে ক্রেতা বেশি হলে দেখতেও ভালো লাগে।

আরও পড়ুন

Advertisement

ইফতারে বনানী-গুলশানের বড় রেস্তোরাঁ ফাঁকা, বেচাকেনা কম চকবাজারে ‘বড় বাপের পোলায় খায়’র চাহিদা বেশি

এসব বিষয়ে বিক্রেতা মিজানুর রহমান বলেন, এবার অন্য বছরের মতো মানুষের পকেটে টাকা নেই। অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তি এখানে আড্ডা দিতে ও ইফতার করতে আসতেন, তাদের আগমনও কমেছে। এসব কারণে বিক্রিও কিছুটা কমেছে।

তবে দু-এক দিনের মধ্যেই বেচা-বিক্রি জমে যাবে বলে জানান অপর বিক্রেতা হাবিব। তিনি বলেন, রমজানের প্রথম দু-একদিন বিক্রি কম হলেও দিন যত বাড়ে, ক্রেতার আগমন তত বাড়ে।

এখানকার ইফতারির মধ্যে ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবি স্পেশাল রেশমি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি, নবাবি শাহি হালিম পাত্রভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে দুই হাজার টাকা। চিকেন ঝাল ফ্রাই এক হাজার ৪০০ টাকা কেজি, বিফ ভুনা এক হাজার ৬০০ টাকা কেজি। মাটন ভুনা এক হাজার ৮০০ টাকা কেজি, ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবি স্পেশাল শাহি জিলাপি ৪৫০ টাকা কেজি, ঘি ও জাফরানে ভাজা নবাবি স্পেশাল বোম্বে জিলাপি ৩৫০ টাকা কেজি। এছাড়া নবাবি ক্ষিরসা ফালুদা ৩৫০ টাকা কেজি, নবাবি জর্দা ২৫০ টাকা কেজি, নবাবি জাফরানি পেস্তা বাদাম শরবত ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজি। নবাবি বোরহানি মিলছে ১২০ থেকে ২৩০ টাকা বোতল, নবাবি লাবাং ১২০ টাকা লিটার, সুইট লাচ্ছি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা লিটার।

এছাড়া বিভিন্ন দোকানে শাহি ছোলা ৩৫০ টাকা কেজি, পেঁয়াজু ১৫ টাকা পিস, বেগুনি ১৫ টাকা পিস, চিকেন সমুচা ৩০ টাকা পিস, ফুলকপির চপ ৩০ টাকা পিস, অন্থন ৩০ টাকা পিস, মধুবান ৫০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। মুরালি ৩০০ টাকা কেজি, ডিমচপ ৩০ টাকা পিস, স্প্রিং রোল ৩০ টাকা পিস, স্পেশাল বাটার নান ৭০ টাকা পিস, রুমালি রুটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা পিস। এছাড়া চিকেন রেশমি কাবাব ২৮০ টাকা পিস, শিক কাবাব ২২০ টাকা পিস, চিকেন সাসলিক ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

ছোট দোকানে মানভেদে প্রতি কেজি রেশমি জিলাপি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা, বুরুন্দি ২৮০, প্রতি পিস প্যাটিস ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চিকেন পরোটা ৫০ টাকা প্রতিপিস, বেগুনি ৫ টাকা, পাকোড়া ৫ টাকা ও মহব্বতের শরবত ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্পেশালি ইফতারির জন্য রান্না করা গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০০ টাকা, মুরগির মাংস ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ইএআর/কেএসআর/এমএস