জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিপ্লবোত্তর অনেক কিছু হবে বলে কল্পকাহিনী প্রচার করা হলেও তার এক ভাগও হয়নি। এসময়ে যতটুকু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
Advertisement
তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
রোববার (২ মার্চ) রাজধানীর মিরপুর-১৪ এর গ্র্যান্ড চাইনিজ রেস্টুরেন্টে জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের উদ্যোগে ঢাকা-১৫ আসনের উলামায়ে কেরাম ও এতিমদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ছাত্র-জনতার সফল আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি। তারা ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সবার নিরাপত্তার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করেছে। তবে বিপ্লবোত্তর এসময়ে যতটুকু হয়েছে সব রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমরা তা-ও সমর্থন করি না। মূলত, এদেশে কোনো বৈষম্যের স্থান দেওয়া হবে না।
Advertisement
আরও পড়ুন
রমজানে দিনে খাবার হোটেল বন্ধ রাখার আহ্বান জামায়াত আমিরের আমরা ভদ্র মানুষ, ভদ্ররা শক্ত হলে কেমন হয় তা দেশের মানুষ জানেতিনি বলেন, আলেম ও তালেব উভয়ই সুসংবাদপ্রাপ্ত। কারণ, হাদিসে রাসুল (সা.)-এ বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যিনি নিজে কোরআন শিক্ষা করেন এবং অন্যকে শিক্ষা দেন’। আমরা আজ তাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে গর্ববোধ করছি।
তিনি দেশ, জাতি ও ইসলামের কল্যাণে দেশের আলেম সমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
জামায়াত আমির বলেন, দ্বীনই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য। দেশে দ্বীনের শিক্ষা যত সম্প্রসারিত হবে ততই সমাজ আলোকিত হয়ে উঠবে। দ্বীনের শিক্ষা সংকুচিত হলে নেমে আসবে অন্ধকার। যার প্রমাণ হচ্ছে পতিত আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের অপশাসন-দুঃশাসন।
Advertisement
তিনি নিজের গ্রেফতারের দুঃসহ স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল গভীর রাতে। কিন্তু আমাকে আয়নাঘরে রাখা না হলেও আমি তা দেখেছি। আমাকে এমনভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল যেন তারা কোনো ভয়ঙ্কর অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে। প্রথম কয়েকদিন কেরানীগঞ্জ কারাগারে রাখার পর আমিসহ ৩৮ জনকে কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। গাড়িতে আমি ছাড়া প্রত্যেকের হাতে হ্যান্ডকাপ ও পায়ে বেড়ি পরা দেখে আমি কেঁদেছি। কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন
বিএনপি-জামায়াতের দ্বন্দ্ব বাড়ছে কেন?তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেককে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তির জন্য রমজান মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালন করতে হবে। এদেশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও নানা ধর্মের মানুষের বসবাস। তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক ও ইয়াসিন আরাফাত প্রমুখ।
এএএম/এমকেআর