আন্তর্জাতিক

গাজায় ফের হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েলের, পশ্চিম তীরেও পাঠিয়েছে ট্যাংক

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল যেকোনো মুহূর্তে ফের হামলা শুরু করতে পারে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেছেন, ‘চুক্তি বা অন্য যেকোনো উপায়ে’ যুদ্ধের লক্ষ্য সম্পূর্ণভাবে অর্জন করবেন তারা।

Advertisement

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের এক অনুষ্ঠানে নেতানিয়াহু বলেন, আমরা যেকোনো মুহূর্তে তীব্র লড়াইয়ে ফিরতে প্রস্তুত। গাজায় আমরা হামাসের অধিকাংশ সংগঠিত বাহিনী ধ্বংস করেছি। কিন্তু কোনো ভুল করবেন না—আমরা যুদ্ধের লক্ষ্য পুরোপুরি অর্জন করবো, সেটি হোক আলোচনার মাধ্যমে অথবা অন্য কোনো উপায়ে।

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি ট্যাংক

দুই দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো অধিকৃত পশ্চিম তীরে ট্যাংক পাঠিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাদের সেখানে ‘দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের’ জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছে নেতানিয়াহুর সরকার।

আরও পড়ুন>>

Advertisement

জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়লো না ইসরায়েল ২৬৬ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ১৩২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল গাজা দখলের পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার ইঙ্গিত ট্রাম্পের

এই উত্তেজনার মধ্যে গত কয়েক ঘণ্টায় অধিকৃত পশ্চিম তীরজুড়ে একাধিক সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছে হেবরন শহর, তুলকারেমের পূর্বে নূর শামস শরণার্থী শিবির, রামাল্লাহ শহরের বেইতুনিয়া এলাকা, উত্তরে রামাল্লাহর কোবার ও সিলওয়াদ শহর, জেনিনের পশ্চিমে সিলাত আল-হারিথিয়া ও জেনিনের দক্ষিণে কাবাতিয়া শহর।

ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যম কুদস নিউজ নেটওয়ার্ক ও ফিলিস্তিনি ইনফরমেশন সেন্টার প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, জেনিনের পশ্চিমে বুরকিন শহরে অভিযান চালিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক চৌরাস্তা ধ্বংস করেছে।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বুলডোজারসহ ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আল-আবারাহ রাউন্ডঅ্যাবাউট খুঁড়ে ফেলেছে, যার ফলে সড়কটি চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।

পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধের শঙ্কা

ফিলিস্তিনি ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের মহাসচিব মুস্তাফা বারঘুতি বলেছেন, গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের এই বৃদ্ধির ফলে ‘পরিস্থিতি সম্পূর্ণ যুদ্ধের দিকে চলে যেতে পারে’।

Advertisement

তার মতে, পশ্চিম তীরে ট্যাংক মোতায়েন এবং ২০০২ সালের পর থেকে সবচেয়ে বড় সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখা ‘প্রকৃতপক্ষে পশ্চিম তীর ফের দখল ও সম্পূর্ণ সামরিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা’, যা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের অস্তিত্বকে প্রায় অপ্রাসঙ্গিক করে দিচ্ছে।

বারঘুতি বলেন, শনিবার ৬০০-র বেশি ফিলিস্তিনিকে মুক্তি না দিয়ে ইসরায়েল ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির গুরুতর লঙ্ঘন করেছে’।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বারঘুতি বলেন, যদি নেতানিয়াহুকে পশ্চিম তীরের অভিযান চালিয়ে যেতে ও গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেওয়া হয়, তাহলে তা চিরতরে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের অবসান ঘটাতে পারে।

সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/