অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. হাসিনুর রহমান খানের লেখা সয়েন্স ফিকশন ‘গ্যালাক্টিক ত্রয়ী’ ও প্রোগ্রামিং বিষয়ক বই ‘সবার জন্য প্রোগ্রামিং’-এর প্রথম খণ্ড। বই দুটি প্রকাশ করেছে ‘সময় প্রকাশন’।
Advertisement
সায়েন্স ফিকশন ‘গ্যালাক্টিক ত্রয়ী’ নিয়ে লেখক বলেন, ‘এখন হতে ৫০ বা ১০০ বছর পর বিজ্ঞানের ব্যাপক অগ্রগতির প্রেক্ষাপটে চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ, এক্সোপ্লেনেট এবং অন্য সৌরজগতে তিন বন্ধুর ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে লেখা গ্যালাক্টিক ত্রয়ী। তারা প্রত্যেকে মহাকাশ বিজ্ঞানী। দুর্দান্ত সাহসী, অসম্ভব বুদ্ধি, মহাবিশ্ব নিয়ে অগাধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। ভ্রমণ ও আবিষ্কার পথের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আবারও পৃথিবীতে ফিরে আসা, মহাবিশ্বের অজানা শক্তির সাথে যুদ্ধ, এলিয়েনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ, প্রাচীন গুহা আবিষ্কার এমনসব নানাবিধ কল্পকাহিনী নিয়ে লেখা বই এটি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে প্রোগ্রামিং শেখা তরুণদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থান ও উদ্ভাবনী দক্ষতার জন্য প্রস্তুত করে তাদের সৃজনশীলতা ও আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে বলেও মনে করেন ড. হাসিনুর রহমান খান। এ নিয়ে তার লেখা ‘সবার জন্য প্রোগ্রামিং’-এর প্রথম খণ্ড প্রকাশ হয়েছে। বইটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু প্রযুক্তি ব্যবহারকারী নয়, বরং প্রযুক্তি নির্মাতা হয়ে ওঠার আত্মবিশ্বাস বহুগুণ বাড়িয়ে দেয় প্রোগ্রামিং। যে যত বেশি আগে থেকে প্রোগ্রামিং শেখা শুরু করে, সে ততই এগিয়ে থাকে। ছোট্ট এই সমীকরণটা আমরা অনেকে বুঝি না, কিংবা বুঝতে বুঝতে সময় পার করে দেই। আগে থেকেই প্রোগ্রামিং শেখার জন্য দারুণ একটা সংগ্রহ হতে পারে এই বইটি।’
সবার জন্য R প্রোগ্রামিং Summaryপ্রোগ্রামিং মানেই যুক্তির সৃজনশীলতার চর্চা। সৃজনশীল, যুক্তিবাদী আর গাণিতিক ভাবে নিজেকে শক্তিশালী করতে চাইলে অবশ্যই প্রোগ্রামিং শেখা উচিত। এর বাইরেও চাইলে কেউ কেউ প্রোগ্রামিং শেখার মধ্যদিয়ে ভবিষ্যতে ওয়েবডেভলোপার, গেম ওয়েবডেভলোপার, ডেটাসায়েন্টিস্ট, ডেটানালিস্ট ইত্যাদি পেশায় নিজের ক্যারিয়ার গড়ার মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে পারে। কম্পিউটার যখন প্রথম শুরু হয়েছিল অ্যালান টিউরিং এর হাত ধরে, তখন শুরুই হয়েছিল কিন্তু প্রোগ্রামিং বা অ্যালগরিদম দিয়ে। সেই থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং এসেছে যেমন আর (R), সি, ফোরটান, জাভা, ভিজ্যুয়াল বেসিক, জাভাস্ক্রিপ্ট, পাইথন, পার্ল, জুলিয়া ইত্যাদি। এই প্রোগ্রামগুলোর ভাবের প্রকাশের ধরন প্রায় একইরকম কেবলমাত্র লেখার বৈশিষ্ট্যে ভিন্নতা থাকে। ফলে এমন যেকোনো একটি বা একাধিক প্রোগ্রামিং জানা থাকলেই হলো। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাস অতিমারির সময় হতে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও কম্পিউটার ব্যবহার এবং লিটারেসি বেড়েছে অনেক গুন। ফলে তাদের জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শেখা এখন অনেক সহজ হয়েছে। বিশ্বব্যাপী দ্রুত কম্পিউটিং এবং প্রযুক্তি বিকাশের প্রেক্ষাপটের কারণে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের দেশেও স্কুল কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামিং শেখার বাধ্যবাধকতা তৈরি হবে|
Advertisement
পৃথিবীর বহু দেশে ইতোমধ্যে তা শুরু হয়েছে| তাই যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য এই সুযোগটা হাতছাড়া করাটা আসলেই এক ধরনের বোকামির পরিচয়। বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে ডেটাই হলো সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আবার এই ডেটা বিশ্লেষণের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামিংগুলোর মধ্যে হলো R ও পাইথন। R প্রোগ্রামিংয়ের ঊপর স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলায় লেখা ভালো মানের বই একেবারেই নেই বললেই চলে। এসব বিবেচনা করে, প্রথম খন্ড এই বইটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণী হতে কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর যেকোনো শিক্ষার্থী, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে লেখা হয়েছে| এই বইটি ঠিক মতো পড়লে এবং অনুশীলন করলে R প্রোগ্রামিং সম্পর্কে শক্ত প্রাথমিক ধারণা রচিত হবে এবং আরও অ্যাডভান্সড লেভেলে R শেখার সঠিক দ্ধার উন্মোচিত হবে। এছাড়াও অন্য যেকোন প্রোগ্রামিং শেখারও আগ্রহ জন্মাবে।
গ্যালাক্টিক ত্রয়ী summaryবিস্ময়কর মহাবিশ্বের বিশালতা এবং এর অজানা রহস্য সবসময়ই মানবজাতির কল্পনাকে উদ্দীপ্ত করে এসেছে। মহাকাশের গভীরতা, গ্রহ-উপগ্রহের অদ্ভুত জগৎ, এলিয়েনদের সম্ভাবনা এবং মহাজাগতিক শক্তির স্রোত-এ সবকিছুই যেন এক অবিরাম কল্পনার জগতের চাবিকাঠি। এই বইটি সেইসব কল্পনা, সাহসিকতা এবং বন্ধুত্বের এক অনন্য মিশ্রণ, যা পাঠকদের এক নতুন মহাজাগতিক অভিযানের দিগন্তে নিয়ে যাবে।
“গ্যালাক্টিক ত্রয়ী” মূলত তিন সাহসী বন্ধুর তুম্পাজুর, ইস্পামুর, এবং কাপনুরের দুঃসাহসিক অভিযানের এক মহাকাব্যিক সংগ্রহ। তারা কেবল মহাকাশের রহস্য উদঘাটন করে না, বরং প্রতিটি অভিযানে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। কখনো তারা মহাকাশের বিপজ্জনক এলিয়েনদের মোকাবিলা করে, কখনো বা মহাজাগতিক শক্তির রহস্য উন্মোচনে লিপ্ত হয়। এই গল্পগুলো শুধু রোমাঞ্চ আর অ্যাডভেঞ্চার নয়, বরং বন্ধুত্ব, বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসের অনন্য উদাহরণ।
প্রত্যেকটি গল্প তোমাদেরকে এক ভিন্ন মহাজাগতিক অভিযানে নিয়ে যাবে প্রাচীন সভ্যতার লুকানো ভান্ডার খুঁজে পাওয়া থেকে শুরু করে এলিয়েনদের সাথে সাক্ষাৎ, গ্রহান্তরের রেস থেকে মহাকালের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ। এই বইটি বিশেষভাবে সেইসব তরুণ পাঠকদের জন্য যারা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং মহাকাশ অভিযানে আগ্রহী, আর যারা কল্পনার পাখায় চড়ে মহাবিশ্বের অজানা পথে পা রাখতে চায়।
Advertisement
তুম্পাজুর, ইস্পামুর, এবং কাপনুরের এই অভিযানের মধ্য দিয়ে পাঠকরা শিখবে, মহাকাশ শুধু রহস্যময় নয়, বরং তা সাহসিকতা এবং কৌশলের পরীক্ষাও। প্রতিটি বিপদ, প্রতিটি ধাঁধা, প্রতিটি শত্রু আমাদের শেখায় যে, সত্যিকারের বিজয় আসে একতায়, বুদ্ধিমত্তায় এবং অবিরাম চেষ্টায়। এই গল্পগুলোর প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন নতুন এক অভিযানের দিগন্ত উন্মোচন করে, আর সেই অভিযানে পাঠকের সঙ্গী হবে তিন বন্ধুর এই গ্যালাক্টিক ত্রয়ী।
এই বইটি লেখার সময়, আমার মূল লক্ষ্য ছিল তরুণদের মধ্যে বিজ্ঞান এবং মহাকাশের প্রতি কৌতূহল জাগানো, তাদেরকে কল্পনার জগতে ভ্রমণ করার সুযোগ করে দেওয়া। আশা করি, “গ্যালাক্টিক ত্রয়ী” তাদের হৃদয়ে এক অমর অভিযানের গল্প হয়ে থাকবে।
এইচআর/এএসএম