অর্থনীতি

রমজানের আগে পণ্যের দাম স্থিতিশীল, সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলে

দুয়ারে কড়া নাড়ছে পবিত্র রমজান। প্রতি বছর এসময়ে ছোলা, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, মুড়ি ও খেজুরের মতো পণ্যগুলোর চাহিদা হু হু করে বেড়ে যায়। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে দাম। তবে এ বছর রমজান ঘিরে ভোগ্যপণ্যের দাম এখনো অনেকটাই স্থিতিশীল।

Advertisement

যদিও প্রায় একমাস ধরে চলা সয়াবিন তেলের সংকট এখনো কাটেনি। অর্থাৎ, বলা চলে সয়াবিন তেল ছাড়া রমজানের অন্যসব পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

রমজানের বাকি মাত্র এক সপ্তাহ। এরই মধ্যে বাজারে রমজানের পণ্য কেনাবেচা শুরু হয়েছে। বেশিরভাগ মুদি দোকানে ক্রেতাদের অন্য পণ্যের সঙ্গে ওইসব পণ্য কিনতে দেখা গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা কেজি দরে। গত বছর রমজানেও এ দামে ছোলা কেনা গেছে। একইভাবে খেসারির ডাল ১১০-১২০ টাকা ও মসুর ডাল ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন

রমজানের আগে ৯ ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়েছে গুদামে খাদ্য লুকিয়ে রাখা যাবে না: অর্থ উপদেষ্টা

মালিবাগ বাজারের মুদি দোকানি এনামুল হক বলেন, ডালজাতীয় কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি, বরং কমেছে কিছুটা। আগের বছর রমজানেও এমন দাম ছিল। মাঝে মসুরের দাম কিছুটা বেড়েছিল, এখন সেটা কমেছে।

মাস দুই আগে চিনির দাম উঠেছিল ১২৫-১৩০ টাকায়। এখন তা কিছুটা কমে ১১৫-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানান এ বিক্রেতা।

তবে অস্থিরতা রয়ে গেছে সয়াবিন তেলের বাজারে। ভোজ্যতেলের সরবরাহ সংকট এখনো কাটেনি। বিভিন্ন দোকান ঘুরে সয়াবিন তেলের দেখা মেলেনি।

Advertisement

সরবরাহ সংকটের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু বিক্রেতা ১৭৫ টাকা লিটারের তেল ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। অনেকে তেলের বোতল কেটে ড্রামে ঢেলে চড়া দামে খুচরায় বিক্রি করছেন।

তেল না পাওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করে একজন ক্রেতা বলেন, রমজানের আগে সয়াবিন তেলের চাহিদা যখন বেড়ে যায় সরবরাহকারীরা তখন ইচ্ছাকৃতভাবে সরবরাহ কমিয়ে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এটি মানুষের পকেট কাটার ধান্দা। এবার অন্যসব পণ্যের মুনাফা তেলে উঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

রমজানের আরেকটি অতিপ্রয়োজনীয় পণ্য পেঁয়াজ। এবছর ভরা মৌসুম হওয়ার কারণে পেঁয়াজ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা নেই। ৪৫-৫০ টাকার মধ্যে পেঁয়াজ কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

আরও পড়ুন

৬ মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি, বাড়তি ভ্যাটে দাম বাড়বে রমজানে মাংসের দাম বেড়েছে, সংকট কাটেনি ভোজ্যতেলের

রমজান ঘিরে বাজারে মুড়ি ও খেজুরের চাহিদাও বাড়ে। বাজারে এখন প্রতি কেজি মুড়ি ৮০-৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত বছরও এমন দাম ছিল বলে জানান বিক্রেতারা।

তবে খেজুরের দাম কিছুটা কমছে। গত বছর রমজানের আগে পণ্যটির দাম অস্বাভাবিক বেড়েছিল। এবার সে তুলনায় খেজুরের বাজার স্থিতিশীল। প্রতি কেজি সাধারণ মানের খেজুর ২৫০-৩০০ টাকা এবং ভালো মানের খেজুর ৪০০-৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে অন্যসব পণ্যের দামেও তেমন হেরফের দেখা যায়নি। স্বস্তি রয়েছে ডিম ও সবজির দামেও। বাজারে সবজির সরবরাহ অনেক; এতে কমেছে দাম। বর্তমানে শালগম ৩০-৪০ টাকা, ধরনভেদে শিম ৩০-৫০ টাকা ও টমেটো ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া বেগুন ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা ও লাউ ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি এখন ২০-২৫ টাকা।

বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও সহনশীল রয়েছে। প্রতি ডজন কেনা যাচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি মুরগির কেজি ৩০০-৩২০ টাকা।

এনএইচ/এমকেআর/এমএস