প্রবাস

পদ্ধতিগত বৈষম্যের শিকার মালয়েশিয়ায় কর্মরত প্রবাসী কর্মীরা

মালয়েশিয়া সরকার এমপ্লয়ইজ প্রভিডেন্ড ফান্ড (ইপিএফ) বিদেশি কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক এবং কর্মীর অবদানের হার ১২ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে কমিয়ে আনার প্রস্তাব করেছে মর্মে স্থানীয় সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

এতে বিদেশি কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তা এবং সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ তৈরি করেছে এবং প্রবাসী কর্মীরা পদ্ধতিগত বৈষম্যের সম্মুখীন হবে বলে তেনাগানিতার নির্বাহী পরিচালক গ্লোরিন দাস মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপ বিদেশি কর্মীদের আরও প্রান্তিক করে তুলবে যারা এরই মধ্যে পদ্ধতিগত বৈষম্যের সম্মুখীন যদিও স্থানীয় অর্থনীতিতে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এটি কর্মীর জন্য বৈষম্যের ব্যবধানকে আরও প্রশস্ত করবে যারা এরই মধ্যে কম মজুরি, খারাপ কর্মপরিবেশ এবং দুর্বল আইনি সুরক্ষার সাথে লড়াই করছে।

Advertisement

দাস বলেন, ইলেকট্রনিক্স, পাম তেল এবং নির্মাণের মতো শিল্পে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও, তারা এখনও মালয়েশিয়ান কর্মীদের মতো একই সুরক্ষার অধিকারী নয়। এই ব্যাপক কমানোর ফলে বিদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়ার প্রবৃদ্ধিতে অপরিহার্য অবদানকারীর পরিবর্তে শ্রম বা পণ্য এবং আর্থিক লাভের উপায় হিসাবে তাদের বিবেচনা করা হয়।

আরও পড়ুন

আবাসিক এলাকায় পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ বিদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ ৩৭ অবৈধ অভিবাসী গ্রেফতার

‘কম হারেও, এটি বিদেশি কর্মীদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কভারেজের জন্য একটি নজির স্থাপন করে, যা ভবিষ্যতে গড়ে তোলা যেতে পারে। তবে, বিদেশি কর্মীদের আর্থিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়ে আরও অর্থবহ অবদানের হার বিবেচনা করা উচিত।’

দাস আরও বলেন, শ্রমিক প্রতিনিধি, ট্রেড ইউনিয়ন এবং অভিবাসী অধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততা শ্রমিক সুরক্ষা এবং ব্যবসায়িক স্থায়িত্বের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে, নিশ্চিত করবে যে নীতিগুলো কেবল করপোরেট স্বার্থ দ্বারা পরিচালিত হবে না।

Advertisement

গত অক্টোবরে ২০২৫ সালের বাজেট উপস্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, সরকার সকল বিদেশি কর্মীর জন্য ইপিএফ অবদান বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা করেছে, এই পরিকল্পনাটি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।

বর্তমানে, বিদেশি কর্মীরা ৬০ বছরের কম বয়সীদের জন্য ১১ শতাংশ এবং তার বেশি বয়সীদের জন্য ৫.৫ শতাংশ হারে ইপিএফে স্বেচ্ছায় অবদান রাখতে পারেন। উভয় প্রকল্পের অধীনে নিয়োগকর্তারা কেবল ৫ রিঙ্গিত অবদান রাখেন।

৩ ফেব্রুয়ারি, আনোয়ার ইব্রাহিম বলেছেন, সরকার অভিবাসী কর্মীদের জন্য বাধ্যতামূলক ২ শতাংশ ইপিএফ অবদান হার বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছে, যা প্রাথমিক প্রস্তাব ১২ শতাংশের চেয়ে কম। তিনি বলেন, সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার আগে মন্ত্রিসভা বিভিন্ন চেম্বার অফ কমার্সের মতামত বিবেচনা করেছে।

পার্টি সোসিয়ালিস মালয়েশিয়া (পিএসএম) কর্মী ব্যুরো প্রধান এম শিবরঞ্জানি প্রশ্ন তুলেছেন, সরকার কি ইপিএফ অবদান হারের বিষয়ে ঐকমত্য অর্জনের জন্য কর্মচারী, নিয়োগকর্তা এবং সরকারকে সম্পৃক্ত করে ত্রিপক্ষীয় সভার ব্যবস্থা করা দরকার। ইপিএফ অবদান প্রস্তাব কি এই ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে, নাকি সরকার শ্রমিকদের মতামত বিবেচনা না করেই কেবল নিয়োগকর্তাদের স্বার্থের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এমন প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের কারণে কোনো ব্যবসা বন্ধ হয়নি। এটির (ইপিএফ অবদান) ক্ষেত্রেও একই অবস্থা হবে বলেও মন্তব্য করেছেন শিবরঞ্জানি।

এমআরএম/এমএস