অর্থনীতি

শুধু ভ্যাটের ওপর নির্ভর করলে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়বে

সরকারের হঠাৎ ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে ‘শিশুতোষ ডিসিশন’ বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক ব্যাংকার এবং ফাইন্যান্স ও বিজনেস স্ট্রাটেজিস্ট সাইফুল হোসেন। তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মানি সাপ্লাই কমানো হচ্ছে, একই সময়ে আবার ভ্যাট বসানো হচ্ছে নিত্যপণ্যে।

Advertisement

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কনফারেন্স হলে জাগো নিউজ আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাইফুল হোসেন বলেন, কর কাঠামো দীর্ঘদিন ধরেই একটা দুর্বল ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। কর প্রশাসনের দক্ষতা এবং করজাল বিস্তারের ক্ষেত্রে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা যায়নি। সরকারের রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে পরোক্ষ কর (ভ্যাট)। এ ভ্যাটের বোঝা সাধারণ মানুষের ওপর চাপানো হচ্ছে, দৈনন্দিন জীবনযাত্রা আরও কঠিন করে তুলছে।

তিনি বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর নিয়ন্ত্রণে মানি সাপ্লাই কমিয়ে মুদ্রানীতি টাইট করা হচ্ছে। তবে মূল্যস্ফীতি কমাতে এটাই একমাত্র পথ না। এর মধ্যে ভ্যাট বাড়ানো হলে এর প্রভাব পড়ে সাধারণ মানুষের ওপরে। আগে যে পরিমাণ টাকায় চলতে পারতাম এখান সেটা সম্ভব হয় না। প্রয়োজনীয় পণ্যে ভ্যাট বসালে মূল্যস্ফীতি কমানো কঠিন হবে। আবার বড় বড় শিল্পে ভ্যাট বসছে, প্রচ্ছন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভ্যাট বসানো হচ্ছে, অন্যরা এর বাইরে থাকছেন।

Advertisement

আরও পড়ুন বর্ধিত ভ্যাট-শুল্কে বড় ক্ষতিগ্রস্ত হবেন কৃষকরা: বাপার সভাপতি ভ্যাট-ট্যাক্সের জাঁতাকলে বিস্কুটের প্যাকেট আর কত ছোট হবে পরিবহন-বাজারে চাঁদাবাজি বন্ধ হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে

এই আলোচক বলেন, নতুন ভ্যাট আরোপে পণ্যের দাম বাড়বে, এটি মূল্যস্ফীতি কমার পরিবর্তে বাড়বে। সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর তুলনামূলকভাবে বেশি বোঝা পড়ে। উচ্চ আয়ের মানুষের ওপর বেশি কর ধার্য করা হয়। আবার শিল্প বন্ধ হচ্ছে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০২৬ সালে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। তাই আয়কর জাল প্রসারিত না করে শুধু ভ্যাটের ওপর নির্ভর করা হয় তাহলে অর্থনৈতিক বৈষম্য বাড়বে।

জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় ও চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভির সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন অর্থনীতিবিদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী, রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ, ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, এসিআই ফুডসের চিফ বিজনেস অফিসার ফারিয়া ইয়াসমিন, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল ও রাজীব চৌধুরী, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, বাপা সভাপতি এমএ হাশেম, ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা, সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন।

ইএআর/ইএ/এমএমএআর/এএসএম

Advertisement