প্রত্যক্ষ কর না বাড়িয়ে আপামর জনগণের ওপর ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক রাজীব চৌধুরী।
Advertisement
ভ্যাট বৃদ্ধির পদক্ষেপের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভ্যাটের আওতামুক্ত বলা হলেও অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাট চাপিয়ে দেওয়া হয়। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আনা গেলে এখান থেকেও প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো সম্ভব। সে কারণে এসএমই শিল্পের স্বার্থে এই সেক্টরকে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাই।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর গুলশানের পুলিশ প্লাজায় মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) কনফারেন্স হলে জাগো নিউজ আয়োজিত ‘ভোক্তার কাঁধে বাড়তি করের বোঝা: উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
রাজীব চৌধুরী বলেন, দেশের এসএমই খাতের অবস্থা ভালো নেই। প্রায় ১৫০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক কারখানা আছে যারা ধুকে ধুকে সামনের দিকে এগোচ্ছে। এগুলো হয়তো অল্প সময়ে অনেক দায় নিয়ে বন্ধ হয়ে যাবে। দেশের স্বার্থে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে এসএমইকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের এসএমই অনেক বছর ভ্যাটের আওতামুক্ত ছিল। তবু অনেকগুলো ইস্যুতে আমাদের ভ্যাট দিতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে ভ্যাটমুক্তের কথা বলেও ভ্যাটের আওতায় আনা হয়।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, দেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ৩০ শতাংশের বেশি। সবচেয়ে বড় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতও এটি। এ খাতে অর্থায়ন, নীতিমালা ও পণ্য বাজারজাতকরণে সমস্যা রয়েছে। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এসএমই খাত এগিয়ে না নিলে সার্বিকভাবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সমস্যায় থাকা এ খাতের ওপর ভ্যাট বসানো হয়। কারখানায় বায়ারের অনুরোধে আমরা অডিট পরিচালনা করি, সেখানে আমাদের ভ্যাট দিতে হয়, কারখানার স্বার্থে মানসম্মত কারখানা গড়তে আর্কিটেকচারার ডিজাইনে আমাদের ভ্যাট দিতে হয়, সিএ ফার্মের ইস্যুসহ অনেক ইস্যুতে আমাদের ভ্যাট বসানো হয়। ভ্যাট দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বা হয়। সরকারের কাছে এসএমই শিল্পের স্বার্থে এই সেক্টরকে ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানাই।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. মুস্তফা কে মুজেরী, অর্থনীতিবিদ ড. এম এম আকাশ, অর্থনীতিবিদ এবং সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য রেজাউল হাসান, বাংলাদেশের নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন-বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সাবেক সভাপতি আশরাফ আহমেদ, ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন, এসএমসি এন্টারপ্রাইজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন নাসির, এসিআই ফুডসের চিফ বিজনেস অফিসার ফারিয়া ইয়াসমিন, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল, বাংলাদেশ অটো বিস্কুট অ্যান্ড ব্রেড ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শফিকুর রহমান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) সভাপতি এম এ হাশেম, সুপার মার্কেট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি দৌলত আকতার মালা ও সাবেক ব্যাংকার সাইফুল হোসেন।
জাগো নিউজের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কে এম জিয়াউল হকের পরিচালনায় গোলটেবিল আলোচনা সঞ্চালনা করেন চিফ রিপোর্টার ইব্রাহীম হুসাইন অভি।
ইএআর/ইএ/এমএমএআর/এএসএম
Advertisement