মেহেরপুরের গাংনী মহিলা ডিগ্রি কলেজে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী উৎসবে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের ৩০ স্টলে শত রকমের বাহারি পিঠায় সাজানো হয়েছে।
Advertisement
কলেজ চত্বরে শোভা পাচ্ছে— স্বতীন পিঠা, বেক্কল জামাই, মেয়েদের মন, জামাইয়ের প্যাচ, ভালবাসার লাল গোলাপ, পিয়াসা, পাটিসাপটা, আন্দসা, চিতই, ভাপা, পুলি, সরু, মালাই রোল, চিটা রুটিসহ ১১১ ধরণের পিঠা। ভোজন রসিকরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছেন আর স্বাদ নিচ্ছেন। সেই সঙ্গে অনেকে এসেছেন সন্তানদের পিঠা-পুলির স্বাদের পাশাপাশি পিঠার সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে।
উৎসবের স্টলগুলোর নামের ভিন্নতাও ভোজন রসিকদের আকৃষ্ট করেছে। দেখা গেছে — ছয় সখীর পিঠা ঘর, আমার পিঠা আমার জামাই, দূরে কেনো কাছে এসো, কফি হাউসের সেই আড্ডা..., পিঠার হাঁড়ি আমার বাড়ি, চুপি চুপি খেয়ে যাও, পিঠা পুলির ঝুলিসহ হরেক রকমের স্টলের নাম।
একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সোনিয়া ইয়াসমীন ও সুরইয়া জামান জানান, পিঠা উৎসব পিঠা পুলির সঙ্গে মানুষের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার মাধ্যম। এ আয়োজনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মরা যেমন হরেক রকম পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারছে তেমনি স্বাদ নিতেও ভুলছেন না।
Advertisement
উৎসবে আসা স্কুলশিক্ষিক জাহাঙ্গীর আলম জানান, বিদেশি অনেক খাবার আমাদের দেশে জায়গা করে নিয়েছে। যার ফলে মায়েদের হাতের অনেক পিঠা বিলুপ্তির পথে। প্রতিবছর পিঠা উসবের আয়োজন করা হলে নতুন প্রজন্ম দেশি পিঠায় পরিচিত হতে পারবে।
কলেজ শিক্ষিকা নিলুফার চৌধুরী জানান, গ্রামাঞ্চলে বিশেষ করে শীতকালে নানা ধরণের পিঠাপুলি তৈরি হয় প্রতিটি বাড়িতে। বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যে পিঠা—পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বহুকাল ধরে। পিঠা উৎসবের আয়োজন এটি লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতির বহিঃপ্রকাশ।
উৎসবে আসা প্রধান অতিথি প্রীতম সাহা জানান, তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। অনেক পিঠার সঙ্গে আমাদের পরিচয় হারিয়ে যাচ্ছে। অনেক পিঠার নাম জানা থাকলেও স্বাদ মনে নেই। আজকের এ পিঠা উৎসবে অনেক পিঠা খেয়ে ছোট বেলার অনেক স্মৃতিই মন করিয়ে দেয়। এভাবে শীত ভর পিঠা উৎসব হোক গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. খোরশেদ আলম জানান, শীতের শেষের দিকে হলেও আমরা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এ উৎসবে বিলুপ্তি হওয়াসহ নতুন নতুন পিঠা নিয়ে স্টল সাজানো হয়েছে। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ পিঠা খেতে এসেছেন। আমাদের এ উৎসবে যারা এসেছেন তাদের দাবির প্রেক্ষিতে প্রতিবছর এমন বর্ণাঢ্য আয়োজন হবে।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/আরএইচ/জেআইএম