টঙ্গীর তুরাগ তীরে আম বয়ানের মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ফজরের পর থেকে ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
Advertisement
এরই মধ্যে দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি তুরাগ তীরে ইজতেমা ময়দানের মূল প্যান্ডেলে এসে অবস্থান নিয়েছেন।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের মাওলানা জিয়াউল হক ফজরের নামাজের পর উর্দুতে আম বয়ান শুরু করেন। তার বয়ান বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে শোনান বাংলাদেশের মাওলানা নুরুর রহমান।
এদিকে আজ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে দেশের বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এ নামাজে অংশ নিতে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে মুসল্লিরা ইজতেমা ময়দানের দিকে আসতে শুরু করেছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথসহ সব পথেই মুসল্লিদের কাফেলা টঙ্গীর দিকে ছুটছে। জুমার নামাজে লাখ লাখ মুসল্লি শরিক হবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
Advertisement
ইজতেমার প্রথম পর্ব আয়োজন করছে তাবলিগের শুরায়ে নেজামি। এটি হবে ছয় দিনব্যাপী। দুটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে এই পর্ব। প্রথম ধাপ ৪১ জেলার মুসল্লি নিয়ে শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি। আর ২৩ জেলা নিয়ে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা শেষ হবে ৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মাওলানা সাদপন্থিদের তিনদিনের ইজতেমা হওয়ার কথা রয়েছে।
ইজতেমা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল পৌনে ১০টায় খিত্তায় খিত্তায় তালিম হবে। তালিমের আগে মোজাকেরা (আলোচনা) করবেন ভারতের মাওলানা জামাল সাহেব। এছাড়া শিক্ষকদের উদ্দেশে সকাল ১০টায় বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা মাওলানা ফারাহিম সাহেব। ছাত্রদের নিয়ে বয়ান করবেন প্রফেসর আব্দুল মান্নান (আলিগড়)।
মাঝে টিনশেড মসজিদে বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আকবর শরিফ। জুমার নামাজ পরাবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের।
এরপর বাদ জুমা বয়ান করবেন জর্ডানের শেখ উমর খতিব। বাদ আসর বয়ান করবেন বাংলাদেশের মাওলানা জুবায়ের সাহেব এবং বাদ মাগরিব বয়ান করবেন ভারতের মাওলানা আহমেদ লাট।
Advertisement
ইজতেমা মাঠের সার্বিক নিরাপত্তায় পুলিশ ও র্যাবের কন্ট্রোল রুম এবং ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। মনিটরিং করা হচ্ছে সিসি ক্যামেরা মাধ্যমে। খিত্তায় খিত্তায় সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া ইজতেমার নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে প্রায় ১০ হাজার।
ইজতেমার মুরুব্বিদের দেওয়া তথ্যমতে, ১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমার আয়োজন করা হয়। তারপর ১৯৪৮ সালে চট্টগ্রামের হাজি ক্যাম্পে ও ১৯৫৮ সালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর লোকসংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৬৬ সালে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমানস্থলে স্থানান্তর করা হয় ইজতেমা। পরে সরকারিভাবে ১৯৭২ সালে তুরাগ তীরের ১৬০ একর জমি স্থায়ীভাবে ইজতেমার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
মো. আমিনুল ইসলাম/জেডএইচ/এমএস