জাতীয়

ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে খালেদা জিয়া-আবু সাঈদ প্রসঙ্গ

দেশের আট বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের প্রশ্নপত্রে এসেছে অনেকটা ভিন্নতা। দীর্ঘদিন পর এবারের প্রশ্নপত্রে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ স্থান পেয়েছে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ ও সময়ের নানা আলোচিত বিষয়।

Advertisement

ভর্তি পরীক্ষার বহুনির্বাচনি অংশে সাধারণ জ্ঞান অংশে খালেদা জিয়াকে নিয়ে প্রশ্নটি ছিল, ‘ঢাকা শহরের প্রথম ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন কে?’ অপশন হিসেবে ছিল চারটি নাম- জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ, বেগম খালেদা জিয়া ও বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ। খালেদা জিয়া ২০০৪ সালে দেশের প্রথম ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেছিলেন।

এদিকে খালেদা জিয়া সম্পর্কিত ইতিহাস আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন ধরে আড়াল করে আসছিল। পাঠ্যবই থেকে শুরু করে প্রশ্নপত্রে তা দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিল।

আরেকটি প্রশ্নে এসেছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে অঙ্কিত শিল্পকর্মের নাম কী?’ উত্তর হিসেবে চারটি নাম ছিল- উন্নত মম শির, অকুতোভয়, বিদ্রোহী ও দুরন্ত। আবু সাঈদের স্মরণে নির্মিত শিল্পকর্মটি হলো, ‘উন্নত মম শির’।

Advertisement

আরেকটি প্রশ্ন ছিল ‘বাংলাদেশের সংবিধানের কোন সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে?’ ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে করা পঞ্চদশ সংশোধনীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। সম্প্রতি এটি পুনর্বহাল করেছেন হাইকোর্ট।

সাধারণ জ্ঞান অংশে আরও কয়েকটি প্রশ্ন ছিল যে ‘অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে কতজন নারী রয়েছেন?’, বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি কে? উত্তর বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। প্রশ্ন এসেছে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে; ‘মুক্তিযুদ্ধে নৌবাহিনী কোন সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছে?’ আরেকটি প্রশ্ন এসেছে-‘কোন ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী মুসলিম?’ উত্তর হলো-পাঙন।

বহুনির্বাচনি অভীক্ষা (এমসিকিউ) বাংলা অংশে এসেছে, ‘বৈষম্যবিরোধী- শব্দটি যে সমাসে নিষ্পন্ন’। আরও প্রশ্ন এসেছে-‘তিন শূন্যের অন্তর্ভুক্ত নয় কোনটি? অপশনে ছিল ‘শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নেট কার্বন নির্গমন, শূন্য ক্ষুধা’। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তিন শূন্যের তত্ত্বের প্রবক্তা। এখানে তিন শূন্য হলো শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য নেট কার্বন নির্গমন।

আরও পড়ুন>>ঢাবিকে সর্বজনীন বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে চাই: উপাচার্য

এ ছাড়াও ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের বিষয় নিয়ে লিখিত অংশে একটি অনুবাদও স্থান পেয়েছে। এতে ইংরেজিতে উল্লেখ করা হয়, ‘শেষ বিকেলে, ঢাকার সড়কে মানুষের ঢল নামে; তারা ছিলেন উৎফুল্ল। কেউ পরিবারের সঙ্গে; কেউ বন্ধুদের সঙ্গে। তারা ঢাক-ঢোল বাজিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এবং স্বৈরশাসককে দুয়োধ্বনি দিতে থাকেন। এটি ছিল ছাত্রদের বিজয়, জনগণের বিজয়! দীর্ঘ সময় পর ফ্যাসিস্ট শাসন থেকে মুক্তি পেয়ে জনগণ উল্লসিত।’

Advertisement

এদিকে শনিবারের (২৫ জানুয়ারি) ভর্তি পরীক্ষায় মোট এক লাখ ২৫ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, সুষ্ঠুভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোনো রকম কোনো অভিযোগ আমরা পাইনি। আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে এ বছর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বসার ব্যবস্থা করতে পেরেছি। এছাড়া শৃঙ্খলা রক্ষায় সেচ্ছাসেবকদের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

এমএইচএ/এসআইটি/এমএমএআর/জেআইএম