বিনোদন

জন এফ কেনেডি হত্যারহস্য নিয়ে ট্রাম্পকে অলিভার স্টোনের ধন্যবাদ

বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাসে আলোচিত এক দিন ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর। সেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ. কেনেডি তার স্ত্রী জ্যাকলিন এবং টেক্সাসের গর্ভনর জন কনালীসহ একটি মোটরকেডে করে ডালাস শহরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন। যখন তারা ডালাসের ডিলি প্লাজা এলাকায় পৌঁছান তখন লি হ্যার্ভি অসওয়াল্ড নামের একজন রাইফেল থেকে তিনটি গুলি করে প্রেসিডেন্টকে হত্যা করেন।

Advertisement

অসওয়াল্ডকে পরে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু তদন্তের পূর্বেই ২৪ নভেম্বর তাকে হত্যা করা হয়। এরপর থেকে হত্যাকাণ্ডটি আজও একটি অমীমাংসিত রহস্য হিসেবে থেকে গেছে বিশ্ব রাজনীতিতে। এ নিয়ে বহু বছর ধরে চলা রহস্য এবং বিতর্কের মধ্যেই গত ২৪ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কেনেডির হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত গোপন ফাইলগুলোর শেষ অংশ মুক্তি দেয়া হবে। এই পদক্ষেপটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আর্কাইভস ও রেকর্ডস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে সংগ্রহ করা ৫ মিলিয়ন ডকুমেন্টের মধ্যে ৩ শতাংশের গোপন ফাইল প্রকাশ করবে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে ধন্যবাদ জানিয়েছেন অস্কার বিজয়ী পরিচালক অলিভার স্টোন। তিনি ১৯৯১ সালে জন এফ কেনেডির বায়োপিক ‘জেএফকে’ নির্মাণ করেছিলেন। সেটি দেশে বিদেশে আজও সমাদৃত।

অলিভার স্টোন এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশংসার যোগ্য। তিনি তার নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জেএফকে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কিত গোপন থাকা ৩ শতাংশ ফাইল মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এই ফাইলগুলো ২০১৭ সালের অক্টোবরে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল। অবশেষে সেটি হতে যাচ্ছে।

Advertisement

স্টোন আরও বলেন, ‘এই ফাইলগুলো থেকে হয়তো কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে না। তবে এগুলো অনেক তথ্য দিতে পারে যা হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে আমাদের ভালোভাবে জানার সুযোগ তৈরি করবে। মানুষ এটা জানতে চায়।’

এছাড়াও অলিভার স্টোন ধন্যবাদের সঙ্গে কংগ্রেস সদস্য স্টিভ কোহেন, ডেভিড শওইকার্ট এবং টিম বারচেটের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন, যারা এই ফাইলগুলো প্রকাশের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করেছেন এবং একটি পর্যালোচনা বোর্ড গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বোর্ডের মাধ্যমেই ফাইলগুলো মুক্তি পাবে।

২৪ জানুয়ারি ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশ জারি করে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেএফকে হত্যাকাণ্ডের গোপন ফাইলগুলোর মুক্তির ব্যবস্থা করতে। একইভাবে, রবার্ট ফ্যানি কেনেডি এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের হত্যাকাণ্ডের ফাইলও ৪৫ দিনের মধ্যে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত ইতিহাসে এক বড় ঘটনার জন্ম দেবে। সাবেক প্রেসিডেন্টদের হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্টের রাজনৈতিক পদক্ষেপ বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হবে। সেইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা বিতর্কেরও হয়তো অবসান ঘটাবে।

Advertisement

এলআইএ/এমএস