অর্থনীতি

শেয়ারবাজারে পচা খুলনা প্রিন্টিংয়ের দাপট

গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। বাজারে এমন মন্দার মধ্যেই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পারা খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসেই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে প্রায় ২৩ কোটি টাকা।

Advertisement

এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীর কাছে কোম্পানিটির শেয়ার আগ্রহের শীর্ষে চলে আসে। ফলে সপ্তাহজুড়েই শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষস্থান দখল করেছে এই কোম্পানিটির শেয়ার। 

সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৩ টাকা ১০ পয়সা। এতে এক সপ্তাহে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে বেড়েছে ২২ কোটি ৬৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১০ টাকা ২০ পয়সা।

কোম্পানিটি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের দশমিক ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে ১ শতাংশ নগদ এবং ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

Advertisement

২০২০ সালের পর বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিতে না পারায় পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির স্থান হয়েছে পচা ‘জেড’ গ্রুপে। এমনকি কোম্পানিটি নিয়মিত আর্থিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করে না। সর্বশেষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানিটি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি ১১ পয়সা করে লোকসান হয়।

আরও পড়ুন

ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিচ্ছে শেয়ারবাজারশেষের বিক্রির চাপে পতনে শেয়ারবাজার

 এই কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়াকে ডিএসই অস্বাভাবিক বলছে। ডিএসই থেকে জনানো হয়েছে, শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার প্রেক্ষিতে কোম্পানিটিকে নোটিশ পাঠানো হয়। তবে তারা সেই নোটিশের জবাব দেয়নি।

২০২৩ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি ডিএসই থেকে কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করা হয়। পরিদর্শনে ডিএসইর প্রতিনিধি দল দেখতে পায়, কোম্পানিটির কার্যক্রম এবং উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক বাড়ার প্রেক্ষিতে এই তথ্যটি প্রকাশ করেও বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছে ডিএসই। এরপরও শেয়ারের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।

Advertisement

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৩০ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে উদ্যোক্তার কাছে ৩৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার আছে। বাকি শেয়ারের মধ্যে ৫৯ দশমিক ১৩ শতাংশই আছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার আছে।

খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের পরে গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের পছন্দের তালিকায় ছিল খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ দশমিক ৫৪ শতাংশ দাম বাড়ায় পরের স্থানে রয়েছে সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।

এমএএস/এএমএ