ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের ফেসবুক গ্রুপ ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ’ এর উদ্যোগে নেওয়া ‘মেধাবীর মিল’ কর্মসূচি দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
Advertisement
২০২১ সালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
কর্মসূচিতে খাবারের অর্থের জোগান দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদের এডমিনদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। গুগল ফর্মের মাধ্যমে অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের থেকে আবেদন সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচির আওতায় আনা হয়। সাধারণ একজন শিক্ষার্থীকে একমাস বা দুইমাস কোনো ক্ষেত্রে তিনমাস মিলের মাধ্যমে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
২০২১ সাল থেকে শুরু করে ২০২৩ সাল পর্যন্ত পুরোদমে মেধাবীর মিল কর্মসূচি চলমান ছিল। ২০২৪ সালে এটি নানান জটিলতায় প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। তবে গত নভেম্বর মাস থেকে এটি আবার চালু করা হয়েছে। নভেম্বরের শেষে পুনরায় গুগল ফর্মের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করা হয়। অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী সেখানে আবেদন করেন। যাচাই বাছাই শেষে তাদের বড় একটি অংশকে এরইমধ্যে অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
মেধাবীর মিল কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা সাব্বির আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর অসচ্ছল শিক্ষার্থী রয়েছেন। যারা গ্রামের দরিদ্র পরিবার থেকে অনেক কষ্ট করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কোনো জায়গা থেকে বৃত্তি পায় না, অনেকের টিউশনি থাকে না, বাড়ি থেকে টাকা আনারও সামর্থ্য থাকে না। তাদের তিনবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাদের জন্য আমরা মেধাবী মিলের ব্যবস্থা করি। এই উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে আমাদের এই কর্মসূচি ছোট পরিসরে চলছে। এই কর্মসূচি বৃহৎ পরিসরে করতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অসচ্ছল শিক্ষার্থীর মুখে হাসি ফুটবে।
আরও পড়ুন
ঢাবির মুহসীন হলে নতুন ভবন নির্মাণে আগামী সপ্তাহেই মাটি পরীক্ষাআরেক উদ্যোক্তা মো. তাওহীদুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের সময় থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি আর তার মধ্যে একটি হলো ‘মেধাবীর মিল কর্মসূচি’। ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আসার পরে কিছু শিক্ষার্থীর আর্থিক অসচ্ছলতা দেখে আমরা এই কর্মসূচি গ্রহণ করি। আমাদের কাছে প্রতিনিয়ত এমন কিছু শিক্ষার্থী যোগাযোগ করে, যারা পরের দিনের এক বেলা খাবারের নিশ্চয়তা নিয়েও ঘুমাতে যেতে পারেন না। অনেক না খেয়ে থাকছেন আবার কেউ খাবারের টাকা জোগাড় করতে রেস্টুরেন্টের থালা-বাসন ধোয়ার কাজ নিয়েছেন।
তিনি বলেন, এগুলো শুনে আমাদের মন ব্যথিত হয়ে উঠে। আমরা তাদের জন্য এই কর্মসূচির আওতায় হল ক্যান্টিন অথবা মেসে টাকা দিয়ে খাবার ফ্রি করে দেই। আমাদের এ কাজে আর্থিক সাহায্য দিয়ে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীরা মিলেই আমরা একটি পরিবার, আমরা সবাই একে অন্যের পাশে দাঁড়াতে পারছি এটাই আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।
Advertisement
এমএইচএ/এসআইটি/এমএস