শিশুদের নিয়ে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করলে অবশ্যই অনেক কিছু চিন্তা করতে হয়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের নিয়ে আরেকটু বেশি। তারপরও সব শিশুদেরই সমান অধিকার, সর্বক্ষেত্রে। অবশ্যই আমাদের তাদেরকে নিয়ে বেড়াতে যেতে হবে। তাদের মধ্যে চ্যালেঞ্জিং বিহেভিয়ার অনেক কিছু থাকলেও সেগুলো পরিবারের সব সদস্যদের মতো আমাদের সবাইকেই সাদরে গ্রহণ করতে হবে। পরিবারের সদস্যরা যদি সামলে নিতে পারেন তাহলে চারপাশের কে কী মনে করলো সেদিকে দৃষ্টিপাত না করাটাই ভালো।
Advertisement
এখন সময় এসেছে সবার মত ওদেরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। সেক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য একটি বিশাল ব্যাপার। শিশুদের মন ভালো থাকলে অবশ্যই তারা নিজেরাই চেষ্টা করবে চ্যালেঞ্জিং বিহেভিয়ার গুলো সামলে নিতে।
শীতের ছুটিতে অবশ্যই প্যারেন্টসরা তাদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুটিকে নিয়ে কোথাও সময় কাটিয়ে আসবেন প্রকৃতির মাঝে। কারণ ওরা প্রকৃতি খুব পছন্দ করে। ওখানে ওদের দিকে আঙুল তুলে তাকানোর মত কেউ থাকে না। ওরা খুব সহজেই মিশে যেতে পারে। অবশ্যই গ্রামের পরিবেশের কথা বলছি।
শহরের মানুষদের চাইতে ওদের মধ্যে জটিলতা কম থাকে। তাই সব শিশুদের মতো বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরও আস্থার জায়গা গ্রামের পরিবেশ। পরিবারের সদস্যরা চেষ্টা করবেন শিশুদের নিয়ে একান্ত নিজস্ব সময় কাটাতে, এখানে মোবাইল, টিভি, কম্পিউটার এসব ডিভাইস থেকে শিশুটিকে একটু দূরে রাখার চেষ্টা করা সম্ভব। একটু কষ্টকর হলেও এটা তাদের জন্য অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।
Advertisement
যখনই শিশুটিকে নিয়ে ভ্রমণের চিন্তা করব তখন থেকেই তার প্রতিটি মুহূর্তের একটি নির্দিষ্ট প্ল্যান প্যারেন্টস এর মধ্যে থাকতে হবে। শিশুটির অসুবিধা গুলো মাথায় রেখে, যেন সে নিজে ডিস্টার্ব না হয় বা অন্যকেও কম ডিস্টার্ব করে। যখনই আমরা তাকে একটি কমফোর্ট জোনে নিয়ে যেতে পারবো তখনই সে নিজেকে সামলে নেয়ার চেষ্টা করবে।
শিশুটিকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা বা ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। কোনোক্রমেই বুঝতে দেওয়া ঠিক হবে না, যে তাকে আলাদাভাবে কেউ দেখছে। স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষমতা তাকে দিতে হবে অবশ্যই মনিটরিং করে। অন্যসব সাধারণ শিশুর মত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরাও স্বাধীনতা পছন্দ করে।
শিশুটির পছন্দ অনুযায়ী যাতায়াত ব্যবস্থা পছন্দ করতে হবে, যাতে সে আনন্দ পায়। তার খাওয়া দাওয়া এবং সুস্থতা সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। প্যারেন্টসদের, শিশুটি যদি কোনো মেডিকেশন নিয়ে থাকে তাহলে প্রথমেই সেগুলো ভালো করে গুছিয়ে নিতে হবে। যেখানে ভ্রমণ করা হবে সেখানের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কোনো কিছু সহজলভ্য না হলে সেটা সাথে নিয়ে যেতে হবে যেমন শিশুর শ্বাসকষ্ট থাকলে নেবুলাইজার মেশিন।
শিশুটির থেরাপি রিলেটেড কিছু খেলনা সাথে অবশ্যই থাকতে হবে, যেগুলো সে পছন্দ করবে। শিশুটি যদি গান শুনতে পছন্দ করে তাহলে মিউজিক সিস্টেম, যেটাতে সে অভ্যস্ত সাথে থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে বকা বা চোখ রাঙানো কোনো কিছু দিয়ে ওদের চ্যালেঞ্জিং বিহেভিয়ারকে সামলানো সম্ভব হয় না। এর জন্য প্রয়োজন আদর এবং ভালোবাসা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা শুধু এই ভাষাটাই খুব ভালো করে নিজেদের মধ্যে আয়ত্ত করে। যে তাকে ভালোবাসে শুধু তার সঙ্গই সে সবসময় কাম্য করে। সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
Advertisement
শিশুটিকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা বা ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ করে দিতে হবে। কোনোক্রমেই বুঝতে দেওয়া ঠিক হবে না, যে তাকে আলাদাভাবে কেউ দেখছে। স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়ানোর ক্ষমতা তাকে দিতে হবে অবশ্যই মনিটরিং করে। অন্যসব সাধারণ শিশুর মত বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরাও স্বাধীনতা পছন্দ করে।
প্যারেন্টসরা তাদের সাধ্যমতো শিশুটির চ্যালেঞ্জিং বিহেভিয়ার সামলানোর চেষ্টা করবেন। তারপরও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। তবেই শিশুটি পরিবারের সবার সাথে আনন্দদায়ক ভ্রমণের সুযোগ পাবে।
কনসালটেন্ট: নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড পেডিয়াট্রিক ডিপার্টমেন্ট, বেটার লাইফ হসপিটাল। প্রাক্তন অটিজম বিশেষজ্ঞ: ঢাকা কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটাল।
এইচআর/জেআইএম