দেশজুড়ে

শিল্পমেলায় দামে হতাশ ক্রেতা, পকেট ভারী বিক্রেতার

ময়মনসিংহে জমে উঠেছে তাঁত বস্ত্র ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পমেলা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বিকেল থেকে বাড়ছে। তবে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার পণ্যের দাম বেশি। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্রেতারা।

Advertisement

সরেজমিন দেখা যায়, পরিবার-পরিজনসহ শিশু-কিশোরদের নিয়ে মেলায় আসছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। তারা মেলায় ঘুরে ফিরে আনন্দ উপভোগ করছেন। শিশুরা বিভিন্ন রাইডে চড়ছে। দোকানগুলোতেও কেনাকাটা জমে উঠেছে।

পছন্দের জিনিস কিনতে এক দোকান থেকে আরেক দোকানে যাচ্ছেন দর্শনার্থী-ক্রেতারা। তবে দাম বেশি হওয়ার কারণে অনেকে পছন্দের পণ্য না কিনেই বাড়ি ফিরছেন।

ময়মনসিংহ সদরের রাঘবপুর থেকে মেলায় এসেছেন আসাদ ও মুক্তা দম্পতি। সঙ্গে ছিল তাদের পাঁচ বছরের ছেলে সন্তান। আসাদ একটি ওষধ কোম্পানিতে চাকরি করেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘শত ব্যস্ততার মধ্যে পরিবারকে একটু সময় দিতে মেলায় এসেছি। একসঙ্গে বিভিন্ন খাবার কিনে খেয়েছি। শিশুদের খেলনার দাম মোটামুটি ঠিক থাকলেও শাড়ি, থ্রি-পিসসহ কসমেটিকস সামগ্রীর দাম গতবছরের চেয়ে বেশি। তারপরও একটি থ্রি-পিস কিনেছি।’

Advertisement

জেলার তারাকান্দা থেকে এসেছেন খোকন মিয়া। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। খোকন ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, মেলা জমে উঠেছে। প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেক ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছেন। ফলে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের লোকজন ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাদের পছন্দের পণ্য কিনতে পরছেন না।

তবে বিক্রেতাদের দাবি, তারা ন্যায্য দামেই সব পণ্য বিক্রি করছেন। তবে যেসব পণ্য তারা বেশি দামে পাইকারিভাবে কিনে এনেছেন, সেগুলো বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

মেলায় কাপড়ের দোকান রয়েছে আজিজ মিয়ার। তিনি বলেন, দাম খুব একটা বাড়েনি। বরং অন্যান্য মার্কেটে কাপড় যে দামে বিক্রি করা হয়, একই কাপড় তার চেয়ে কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে মেলায়।

আজিজ মিয়া বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে মেলা প্রাঙ্গণ আরও সরগরম হয়ে উঠবে বলে মনে হচ্ছে। এতে আমাদের বেচাকেনা আরও চাঙা হবে।

Advertisement

শিশুদের বিভিন্ন খেলনা বিক্রি করছেন সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো খেলনার দাম বেশি বাড়াইনি। যতটুকু লাভ করার কথা ততটুকুই লাভ করা হচ্ছে। আমার দোকানে এসে ক্রেতারা সন্তুষ্ট।’

যাদের জন্য মেলার আয়োজন, তাদের কাছ থেকেই দাম বেশি রাখা হলে মেলা থেকে দর্শনার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন মনে করেন ময়মনসিংহ নাগরিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন কালাম।

তিনি বলেন, আমরাও চাই মেলা জমে উঠুক। ক্রেতারা কেনাকাটা করার সঙ্গে আনন্দে মেতে উঠুক। লাভবান হোক বিক্রেতারাও। কিন্তু দাম মাত্রাতিরিক্ত বেশি রেখে ব্যবসা করতে চাইলে দর্শনার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেবেন। এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিক্রেতারাই।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক উম্মে হাবিবা মীরা জাগো নিউজকে বলেন, আমরা চাই মেলা জমে উঠুক। তবে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির প্রমাণ মিললে বিক্রেতার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ১২ ডিসেম্বর থেকে নগরীর কাঁচারিঘাট বালুরচরে তাঁত বস্ত্র ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্পমেলা শুরু হয়েছে। মাসব্যাপী চলবে এ মেলা। মেলাকে অশ্লীলতা, জুয়া ও হাউজি মুক্ত করা হয়েছে। পুলিশি নিরাপত্তাসহ পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং করা হচ্ছে।

কামরুজ্জামান মিন্টু/এসআর/জিকেএস