২০১৬ সালে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালপল্লিতে তিনজনকে হত্যা, লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদসহ জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক সমন্বয় কমিটি।
Advertisement
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের পাঁয়তারার প্রতিবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) চেয়ারপারসন ও নিজেরা করি’র সমন্বয়ক খুশী কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসাইন ও সুব্রত চৌধুরী, গাইবান্ধা জজ কোর্টের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম বাবু, গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কেসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা লিখিত বক্তব্যে বলেন, বন্ধ চিনিকলগুলো চালু করা আদৌ লাভজনক হবে কিনা তার সম্ভাব্যতা যাচাই করতে উপযুক্ত বিশেষজ্ঞ দল নিয়োগ করে তাদের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ও সুপারিশ বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আগে কোনো বন্ধ চিনিকল চালু করা ঠিক হবে না।
Advertisement
সরকারি চিনিকলগুলোর লোকসানের পেছনে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান ও দায়ীদের চিহ্নিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেন শামসুল হুদা। তিনি বলেন, এ জন্য তথ্যাভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী ও স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করতে হবে। উপর্যুক্ত কাজ সম্পন্ন হওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ চিনিকল চালুর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে হবে।
এসময় জানানো হয়, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বাগদা ফার্মের রিক্যুইজিশন করা জমি আখ চাষের নামে নেওয়া হলেও বিগত প্রায় দুই দশক ঐ কাজে ব্যবহৃত হয় না। তাই এক হাজার ৮৪২ দশমিক ৩০ একর তিন ফসলি কৃষিজমি মূল সাঁওতাল আদিবাসী মালিকদের উত্তরাধিকারী ও তাদের পরিবার-পরিজন এবং অন্যান্য আদি-বাঙালি কৃষক পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর সাঁওতাল পল্লীতে হামলাকারী, অগ্নিসংযোগকারী, লুটপাটকারী পুলিশের একাংশসহ অভিযুক্ত সবাইকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ঘটনার দিন গোবিন্দগঞ্জে শ্যামল হেমব্রম, মঙ্গল মার্ডি ও রমেশ টুডুকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এই হত্যার সঙ্গে স্বৈরশাসকের দোসর স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ এবং চিনিকলের ব্যবস্থাপক আব্দুল আউয়ালের সম্পৃক্ততা ছিল বলে অভিযোগ আছে। অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে আইন অনুযায়ী দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবি জানানো হয়।
Advertisement
ইএআর/এএমএ/এমএমএআর/জিকেএস